সামনে ভোট তাই সরকার দুয়ারে— বিরোধীদের এই অভিযোগকে কার্যত উড়িয়ে দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বাজেট তথা ভোট অন অ্যাকাউন্ট পেশের সময় তিনি ঘোষণা করলেন, ‘দুয়ারে সরকার’ ও ‘পাড়ায় সমাধান’ বছরে দু’বার করে হবে। একইসঙ্গে ধারাবাহিকভাবে চলবে রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পও। মমতা জানান, ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড প্রতি তিন বছর অন্তর পুনর্নবীকরণ করা যাবে।
রাজ্যের বিরোধী দল, বিশেষ করে বিজেপি ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পকে ‘যমের দুয়ারে সরকার’ বলে কটাক্ষ করে এসেছে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন কারও নাম না করেই পাল্টা কটাক্ষ করে বলেন, ‘অনেকে ভাবছেন হয়তো এ বছরই শেষ হয়ে যাবে, তা নয়। আমি মনে করি, বিশ্বের কাছে অভিনব এই ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি।’ তাঁর মতে, সারা পৃথিবী আগামীদিনে এই কর্মসূচি দুটি থেকে শিক্ষা নেবে। নজির হয়ে থাকবে ‘দুয়ারে সরকার’ ও ‘পাড়ায় সমাধান’।
এদিন বাজেটে জানানো হয়েছে, ‘দুয়ারে সরকার’ ও ‘পাড়ায় সমাধান’— এই দুটি কর্মসূচি প্রতি বছর দু’বার করে হবে। এ ব্যাপের মমতা এদিন জানান, ‘যাঁর যাঁর কোনও সমস্যা থাকবে তাঁরা প্রথম ধাপে অগস্ট–সেপ্টেম্বর মাস এবং দ্বিতীয় ধাপে ডিসেম্বর–জানুয়ারি মাসে এই দুটি কর্মসূচির শিবিরে এসে জানাতে পারবেন।’
উল্লেখ্য, ‘দুয়ারে সরকার’ ও ‘পাড়ায় সমাধান’— ভোটের মুখে এই দুই জনকল্যাণমূলক তথা জনসংযোগ কর্মসূচি ঘোষণা তৃণমূলের কাছে তুরুপের তাসের মতো কাজ করেছে। এই দুটির সাফল্যের নেপথ্যে থাকা প্রশাসনিক আধিকারিক তথা বিডিও, এডিএম, এসডিও এবং পুলিশ আধিকারিকদের সাহসিকতা ও কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের এদিন কুর্নিশ জানিয়েছেন মমতা।
এদিকে, বিনামূল্যে চিকিৎসা ও নগদ জমা ছাড়া (ক্যাশলেস) বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সুবিধা পাওয়া যায় রাজ্য সরকারের ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পে। শুক্রবার পেশ করা ভোট অন অ্যাকাউন্ট বা বাংলার অন্তর্বর্তী বাজেটে এই স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রকল্প আগামীদিনেও ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে যাবে বলে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন তিনি জানান, ‘এই প্রকল্প প্রতি বছর ধারাবাহিকভাবে চলবে। যাঁরা এই প্রকল্পে পরবর্তীকালে যোগ দিতে চান তাঁরা যে কোনও সময় যোগ দিতে পারবেন। ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড প্রতি তিন বছর অন্তর পুনর্নবীকরণ করা যাবে।’ স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশে আগামী অর্থবর্ষে দেড় হাজার কোটি টাকা এদিন বরাদ্দ করা হয় বাজেটে।