এবার দুয়ারে সরকার কর্মসূচি চলবে গোটা সেপ্টেম্বর মাস ধরে। এই দুয়ারে সরকার শিবিরে এবার একটা নতুন বিষয় আনছে রাজ্য সরকার। সেটা হল—পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম নথিভুক্তকরণের সুবিধা। পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা এভাবে আগে কখনও কোনও সরকার ভাবেনি। এই পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা প্রথম সবার সামনে আসে যখন দেশজুড়ে লকডাউন পরিস্থিতি তৈরি হয়। তখন থেকেই ভাবা হচ্ছিল কেমন করে পরিযায়ী শ্রমিকদের জীবনে সরকারি সহায়তা পৌঁছে দেওয়া যায়। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য সুখবর নিয়ে এল।
এদিকে কিছুদিন আগেই পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম নথিভুক্ত করার জন্য পৃথক পোর্টাল চালু করেছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং পরিযায়ী শ্রমিকদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, এই পোর্টালে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করার জন্য। এখন অনেকের প্রশ্ন, এখানে নাম নথিভুক্ত করলে কী হবে? কোন সাহায্য মিলবে? বাড়তি কোনও সুযোগ–সুবিধা পাওয়া যাবে কি? রাজ্য সরকার একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, কর্মসূত্রে ভিন রাজ্যে মারা গেলে পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা পর্যন্ত নগদ সাহায্য করা হবে। আবার কর্মসূত্রে দুর্ঘটনায় জখম হওয়া পরিযায়ী শ্রমিক কর্মক্ষমতা হারালে এক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। পরিযায়ী শ্রমিকদের দক্ষ করে তুলতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে সরকার বলে সূত্রের খবর।
অন্যদিকে তাই এই নাম নথিভুক্তকরণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য নতুন করে ভাবনাচিন্তা করেছে রাজ্যের শ্রম দফতর। সূত্রের খবর, পরিযায়ী শ্রমিকদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে কেরল, নয়াদিল্লি এবং মহারাষ্ট্রে অফিস খুলতে চলেছে রাজ্যের শ্রম দফতর। যাতে পরিযায়ী শ্রমিকরা বিপদে বা সমস্যায় পড়লে তাঁরাও এখানে যোগাযোগ করতে পারেন। আবার এই অফিস থেকে তাঁদের সাহায্য করাও হবে। এছাড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের একটা ডেটা ব্যাঙ্ক তৈরি করা সম্ভব হবে। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য একটি নতুন পোর্টাল এবং অ্যাপ চালু করার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটককে চেয়ারম্যান করে নয়া উন্নয়ন বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন’, বুদ্ধবাবুকে দেখতে হাসপাতালে মুখ্যমন্ত্রী–রাজ্যপাল
আর কী জানা যাচ্ছে? নবান্ন সূত্রে খবর, পরিযায়ী শ্রমিকদের আরও খারাপ চিত্র দেখা গিয়েছে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পর। সেখানে বাংলার অনেক মানুষও মারা যান। যা ভাবিয়ে তুলেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাই রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, পরিযায়ী শ্রমিকরা অন্যত্র কাজে গিয়ে বিপদে পড়লে তাঁদের এবং তাঁদের পরিবারের সহযোগিতা করা হবে। আর সেই সহযোগিতা পৌঁছে দিতেই এবার দুয়ারে সরকার শিবির থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম নথিভুক্ত করার সুযোগ করার সুযোগ করে দেওয়া হবে। তাতে লাভ কী হবে? পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য প্রকল্প ও সামাজিক সুরক্ষা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। নাম নথিভুক্ত না থাকলে তা দেওয়া সম্ভব হবে না।