রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের স্বীকৃতি নিতে নারাজ। এই অনীহা দেখা গেল কল্যাণী থেকে কলকাতা। কল্য়াণী লুমিনাস ক্লাব আগেই রাজ্যপালের দুর্গারত্ন পুরষ্কার প্রত্যাখ্যান করেছে। তাতে দুর্গাপুজোর মরশুমে জোর চর্চা শুরু হয়। এবার রাজ্য়পালের দুর্গারত্ন পুরষ্কার প্রত্যাখান করল কলকাতার টালা প্রত্যয় পুজো কমিটিও। একদিকে এই পুরষ্কারের বাছাই পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন অপরদিকে ধেয়ে এল পরামর্শ। পুজো উদ্যোক্তাদের এই কাজে এখন সরগরম রাজ্য–রাজনীতি। পর পর দুটি নামকরা পুজো কমিটি পুরষ্কার প্রত্যাখ্যান করার জেরে ব্যাকফুটে রাজ্যপাল। বাংলায় তিনি যে সমান্তরাল প্রশাসন চালাতে চাইছেন তাতে এবার জোর ধাক্কা লাগল।
এদিকে উত্তর কলকাতার অন্যতম সেরা দুর্গাপুজো টালা প্রত্যয়। এবার তারা দুর্গাপুজোর থিম করেছে ‘কহন’। যেখানে মণ্ডপ জুড়ে আলো–আঁধারির খেলা আছে। যা অপূর্ব লেগেছে দর্শনার্থীদের চোখে। এবার একাধিক পুরষ্কার পেয়েছে এই পুজো কমিটি। আর রাজভবনের পক্ষ থেকে এবার যে চারটি দুর্গাপুজো কমিটিকে পুরষ্কৃত করা হয়েছে তার মধ্যেও টালা প্রত্যয়ের নাম আছে। তাও আবার একেবারে প্রথমেই। আর দ্বিতীয় স্থানে ছিল কল্যাণীর আইটিআই মোড়ের লুমিনাস ক্লাবের দুর্গাপুজোর নাম। এরপর আছে উত্তর ২৪ পরগনার বরাহনগরের ‘বন্ধুদল স্পোর্টিং ক্লাব’ এবং বরাহনগরের ‘নেতাজি কলোনি লো ল্যান্ড’। প্রথম দুটি পুজো কমিটিই রাজ্যপালের পুরষ্কার প্রত্যাখ্যান করেছে। বাকি দুটি কোন পথে হাঁটে সেটাই দেখার।
অন্যদিকে রাজভবন থেকে এই বছর শহর ও শহরতলির শ্রেষ্ঠ দুর্গাপুজোগুলিকে পুরষ্কৃত করার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। রাজভবন থেকে এই পুরষ্কারের নাম দেওয়া হয় ‘দুর্গারত্ন’। কারা পাবে দুর্গারত্ন পুরষ্কার? বিজয়ী দশমীর দিন শ্রেষ্ঠ দুর্গাপুজোর তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেই তালিকায় নাম ছিল কল্য়াণী লুমিনাস ক্লাব ও কলকাতার টালা প্রত্যয় পুজো কমিটির। এই পুরষ্কার বাবদ ওই দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে রাজভবনের পক্ষ থেকে দেওয়ার কথা এক লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। সেই টাকা–সহ পুরষ্কার প্রত্যাখ্যান করল দু’জনেই।
আরও পড়ুন: ‘চব্বিশের মহাযুদ্ধে একটা প্যাণ্ডেলে রাম আটকে থাকবে না’, মেয়েদের সিঁদুরকে সাক্ষী রেখে শপথ মদনের
আর কী জানা যাচ্ছে? এই নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে। আর বিষয়টি নিয়ে টালা প্রত্যয় পুজো কমিটির সম্পাদক শান্তনু ঘোষ বলেন, ‘কলকাতায় যারা দুর্গাপুজো করে তাদের যত প্রতিযোগিতা হয়, তাতে আবেদন পদ্ধতি থাকে। জাজেস প্যানেল এসে দেখা থেকে নানা কাজ থাকে। তারপর তো জয়–পরাজয়। তাতে একটা ভ্রাতৃত্ববোধও কাজ করে। সেখানে আমরা তো কোনও আবেদনই করিনি। তাহলে এটার বিচার কেমন করে হল? কলকাতায় একমাত্র আমরাই এই পুরষ্কার পেয়েছি। তাতে কলকাতার সমস্ত দুর্গাপুজোর যে বন্ডিং সেটা ধাক্কা খাচ্ছে। কোনও বিচারক, প্রক্রিয়া ছাড়া এটা চলছে। আমরা তাই সরে দাঁড়িয়েছি। তবে আগামী বছর যদি ওনারা নিয়ম অনুযায়ী সবটা করেন, বিচারক আসেন সবটা দেখেন, তারপর দেখা যাবে।’