অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা বাড়ছে। এই সমস্ত প্রতারকদের লক্ষ্য হল সাধারণ মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নেওয়া। এর জন্য বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করছে প্রতারকরা। তার মধ্যে অন্যতম হল সেক্সটরশন। আর এবার সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতাতে নয়া পদ্ধতিতে সেক্সটরশন শুরু করেছে প্রতারকরা। একেবারে নতুনভাবে সাধারণ মানুষকে ব্ল্যাকমেল করে তারা টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। মানুষকে ফাঁদে ফেলতে ডেট সার্টিফিকেটের মতো নথি দেখিয়ে হুমকি দিচ্ছে প্রতরকরা। সম্প্রতি এই ঘটনার তদন্তে নেমে এমনই তথ্য পেয়েছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন: ‘MBA করার পয়সা নেই, তাই’, মহিলাদের নগ্ন ছবি দেখিয়ে তোলাবাজি, ধরল কলকাতা পুলিশ
কলকাতার এক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত নেমে লালবাজার উত্তরপ্রদেশে হরিয়ানা থেকে ২ প্রতারককে গ্রেফতার করেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন বহু মানুষকে ভুয়ো ডেথ সার্টিফিকেট দেখিয়ে তারা ব্ল্যাকমেল করত। তদন্তকারীদের অনুমান, এই চক্রের সঙ্গে আরও অনেকে জড়িত। তারা মুম্বাইয়ে গা টাকা দিয়ে রয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতার ওই বাসিন্দার মোবাইলে অপরিচিত নম্বর থেকে একটি ভিডিয়ো কল আসে। সেটি ধরে ফেলার পরে তিনি এক মহিলার অশ্লীল ভিডিয়ো দেখতে পান। এরপর ওই ব্যক্তির কাছে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ আসতে শুরু করে। ভিডিয়ো কলে তাঁকে দেখা যাচ্ছে এই দাবি করে ব্ল্যাকমেল করে প্রতারকরা। কিন্তু, তাতে সাড়া দেননি তিনি। শেষে প্রতারক ভিন রাজ্যের এক পুলিশ কর্তার নাম করে জানায় যে তিনি যে মহিলার সঙ্গে ভিডিয়ো কলে কথা বলেছিলেন সেই মহিলাকে নগ্ন অবস্থায় দেখার ফলে লজ্জায়, গ্লানিতে তিনি রেললাইনে গলা দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। তারপরেও ওই ব্যক্তি বিশেষ গুরুত্ব দেননি। কিন্তু, কলকাতার ওই ব্যক্তির হোয়াটসঅ্যাপে মহিলার একটি ডেথ সার্টিফিকেট পাঠায় প্রতারক।
তারা জানায়, মৃত্যুর কারণ হিসেবে ওই ব্যক্তির নাম লিখেছেন ওই মহিলা। রেল লাইনে গলা দিয়ে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন। জিআরপিতে একটি মামলাও হয়েছে। তিনি ডেথ সার্টিফিকেট এবং মোবাইলের ছবি দেখার পর চমকে ওঠেন। এরপর প্রতারকরা বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার জন্য ১০ লক্ষ টাকা দাবি করে। সেই মতোই তিনি ভয় পেয়ে তাদের অ্যাকাউন্টে তিন লক্ষ টাকা পাঠিয়ে দেন। কিন্তু সন্দেহ হওয়ার পর ওই ব্যক্তি লালবাজারের সাইবার বিভাগে গিয়ে অভিযোগ জানান। তারপরে তদন্ত নেমে পুলিশ জানতে পারেন মুম্বইয়ের কোনও হাসপাতাল থেকে ওই মহিলার নামে সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়নি সেটি আসলে ভুয়ো সার্টিফিকেট। শুধু তাই নয় সংশ্লিষ্ট জিআরপিতে গিয়েও খোঁজ নেন গোয়েন্দারা। তারপরে তারা নিশ্চিত হন যে এটি প্রতারণার ঘটনা। তার ভিত্তিতে তদন্তে পুলিশ সতীশ কুমার ও রমেশকে গ্রেফতার করে।