গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনায় এলাকার প্রোমোটার মহম্মদ ওয়াসিমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কে এই ওয়াসিম? তার উত্থানে কোথায় যেন সন্দেশখালির শেখ শাহজাহানের সঙ্গে মিল রয়েছে। শাহজাহান যেমন ট্রেকারের হেল্পার থেকে বিশাল সাম্রাজ্য বানিয়েছে। তেমনি ছোট পরিসরে ওয়াসিমের উত্থানের গল্পও প্রায় একই রকম।
সে ক্ষমতার জোরে এলাকায় অনুমোদনহীন বহুতল বানিয়ে ফেলেছে হেলায়। যে বহুতলটি রবিবার রাতে ভেঙে পড়েছে সেটি একটি জলাশয় বুজিয়ে করা হয়েছে বলে অভিযোগ। স্রেফ ক্ষমতার জোরে সে অনুমোদনহীন বহুতলটি তুলতে শুরু করে। কী করে করে সে এই ক্ষমতা পেল? তার পিছনে কোন ক্ষমতাশালী ব্যক্তি রয়েছে এমন হাজার প্রশ্ন উঠে আসছে।
আদতে রাজাবাজার এলাকার বাসিন্দা একটা সময় এলাকায় দুধ সরবরাহ করত। তার আস্তে আস্তে সে পরিবহণ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হয়। কিন্তু সে খানে থেমে থাকেনি সে। জানা গিয়েছে, ফিরোজ নামে এক যুবকের সঙ্গে সে গার্ডেনরিচ এলাকায় নির্মাণ ব্যবসাও শুরু করে। এর সঙ্গে চলে শেয়ার মার্কেটে টাকা খাটানোও। স্ত্রী নামে সে জামাকাপড়ের ব্যবসাও শুরু করে। আরও জানা গিয়েছে, বর্তমানে সে কলকাতা পুরসভার ১৩৪ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শামস ইকবালের ব্যবসা সামলাতো। তার জোরেই কি সে জলাশয়ের উপর অনুমোদনহীন বহুতলটি নির্মাণ করতে শুরু করে?
আরও পড়ুন। ‘স্কোয়ার ফিট কাউন্সিলর’দের জন্য ভেঙেছে বহুতল, গার্ডেনরিচ নিয়ে দাবি সুকান্তর
কাউন্সিলর শামস ইকবালের গ্রেফাতারি দাবি করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ঘটনার পর থেকে কাউন্সিলারের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে শুভেন্দুর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মুখ খুলেছেন শামস ইকবাল। তিনি বলেন, 'আমি এই ওয়ার্ডের পৌর প্রতিনিধি। আমার কাজ পৌর পরিষেবা প্রদান করা। আমি সেই কাজটাই করে থাকি। এর বাইরে কোন বাড়ি আইনি অথবা বেআইনিভাবে হয় সেই বিষয়টি দেখার জন্য বিল্ডিং বিভাগ আছে। তাঁদের আধিকারিকরা আছেন। তাঁরাই এই বিষয়টি বুঝবেন এই বিষয়ে আমি কিছুই জানি না বা আমার কাছে খোঁজ খবরও থাকে না।'
প্রশ্ন হল, তার এলাকা বেআইনি নির্মাণ চলছিল অথচ তিনিই জানেন না? এলাকাবাসী জানিছেন, গার্ডেনরিচ থানা ও ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সবাই সব কিছু জানে। এলাকায় ওয়াসিমদের দাপটের কাছে কেউ প্রতিবাদ বা বাধা দেবার সাহস দেখায় না।