ছাত্র ছাত্রীদের পড়ানো নিয়ে হয়, বেতন নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন রাজ্যের শিক্ষক সমাজের একাংশ। কোনও রাজনৈতিক নেতা নয়, এই মন্তব্য কলকাতা হাইকোর্টের। নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে বুধবার উদ্বেগ প্রকাশ করে একথা বলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। তিনি স্পষ্ট করেন, চাকরিহারা শিক্ষকদের চাকরি নয়, ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি বেশি উদ্বিগ্ন।
বুধবার রাজ্য সরকারের সুপার নিউমেরারি পদ তৈরি করার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হওয়া মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে। সেখানেই অবৈধভাবে চাকরি পাওয়ায় চাকরি থেকে বরখাস্ত প্রার্থীদের আইনজীবীর বক্তব্য শুনে বিরক্তি প্রকাশ করেন বিচারপতি বসু। বলেন, এই পদগুলো তৈরি হয়েছে যাদের চাকরি চলে গিয়েছে তাদের চাকরি দেওয়ার জন্য। তারা রোজ কুম্ভীরাশ্রু বর্ষণ করছে। ওদিকে এই টানাপোড়েনে ছাত্রছাত্রীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে’। এর পরই বিচারপতি বসু বলেন, ‘আজ যারা চাকরির জন্য কাকুতি মিনতি করছে চাকরি পেলেই তাদের ভোল বদলে যাবে। তখন তারা এর – ওর গলায় ঝুলে পড়ে বলবে আমাকে বাড়ির কাছে বদলি করে দেও। উৎসশ্রী, শুভশ্রী প্রকল্পে আবেদন করবে। বেতন সহ পাঁচটা জিনিস নিয়ে মগজমারি করবে। কিন্তু মন দিয়ে পড়াবে না।’
বিচারপতি আরও বলেন, ‘তাই আমি চাকরিহারা শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবিত নই। আমি ভাবিত ছাত্রদের ভবিষ্যৎ নিয়ে। রাজ্যের অনেক সরকারি স্কুল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অনেক স্কুল ধুঁকছে। অনেক স্কুলে কোনও ছাত্র নেই।’
রাজ্যে সরকারি স্কুল শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল দশার প্রসঙ্গ ইতিমধ্যে একাধিকবার উত্থাপিত হয়েছে। বদলি সংক্রান্ত একটি মামলা আদালত শহরের স্কুল থেকে গ্রামের স্কুলে শূন্যপদে শিক্ষকদের বদলির নির্দেশও দেয়। সেই নির্দেশ দেওয়ার সময়ও একই রকম উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন বিচারপতি বসু।