কলকাতা পুরসভার বাজেট অধিবেশনে সিপিআইয়ের কাউন্সিলরকে নিয়ে বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্য করার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে তুমুল শোরগোল পড়ে যায় পুরসভার অন্দরে। এর তীব্র প্রতিবাদ জানান বিরোধী কাউন্সিলররা। অভিযোগ বাজেট অধিবেশনে ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অরিজিৎ দাস ঠাকুর আলো নিয়ে আলোচনার সময় পুরসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান তথা ৯২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মধুছন্দা দেবকে নিয়ে বর্ণবিদ্বেষ মূলক মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: ‘আবাসনে বসবাসকারী প্রত্যেকেরই ছাদের অধিকার সমান’, বড় ঘোষণা করলেন মেয়র
বাজেট অধিবেশনে আলোয় বরাদ্দ নিয়ে প্রশ্ন তুলে মধুছন্দা মন্তব্য করেছিলেন, শহরে অনেক আলো তারপরেও আলোর জন্য কেন এত টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে? সেই টাকা অন্য খাতে বরাদ্দ করা যেত বলে তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন। তার উত্তরে অরিজিৎ দাস বলেন, ‘আগে লাল আলোয় দাঁড়ালে আপনাকে দেখা যেত না, এখন সাদা আলোর নিচে দাঁড়ালে আপনাকে ফর্সা লাগবে।’ গায়ের রং নিয়ে তৃণমূল কাউন্সিলরের এমন মন্তব্যের পরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পুরসভা। এর তীব্র প্রতিবাদ জানান সিপিএমের কাউন্সিলর নন্দিতা রায় থেকে শুরু করে বিজেপির কাউন্সিলর সজল ঘোষ, বিজয় ওঝা এবং অন্যান্যরা। তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে মধুছন্দা জানান, তিনি কালো হলেও একজন মহিলা। যিনি তাকে নিয়ে এই মন্তব্য করেছেন তার দলের নেত্রীও একজন মহিলা। সুতরাং তার দলের কাউন্সিলরের মুখে এই ধরনের মন্তব্য মোটেই শোভা পায় না। তৃণমূল কাউন্সিলরের এমন মন্তব্যকে সমর্থন করেননি পুরসভার চেয়ারপার্সন মালা রায়। তিনি জানান, কোন মহিলাকে নিয়ে এরকম মন্তব্য একেবারে সমর্থনযোগ্য নয়। যদিও প্রতিবাদের মুখে পড়ে শেষমেষ মধুছন্দা দেবীর কাছে ক্ষমা চান অরিজিৎ দাস। অধিবেশন শেষে অরিজিৎ দাস মধুছন্দার আসনের কাছে গিয়ে কথা বলেন। মধুছন্দা জানান, তৃণমূল কাউন্সিলর তাঁর কাছে গিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন।
প্রসঙ্গত, সোমবার বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল কাউন্সিলর অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বাইবেলের উল্লেখ উপমা টেনে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন পরে মেয়র ফিরহাদ হাকিম তাকে শোকজ করেছিলেন। এরপর তাকে পুরো অধিবেশনে না আসার পরামর্শ দেওয়া হয়। মঙ্গলবার থেকে পুরো অধিবেশনে দেখা যায়নি তাঁকে। সেই বিতর্কের রেশ কাটতে না কাটতেই আবার বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্যের অভিযোগ উঠল তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে।