কলকাতা পুরসভা এখন আয় বাড়াতে তৎপর হয়েছে। কারণ নানা কাজ এবং প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে গিয়ে কোষাগারে টান পড়েছে। আবার পার্কিং ফি ও লাইসেন্স ফি বাড়ানো যায়নি। সুতরাং কোষাগারের স্বাস্থ্য আরও রোগা হয়েছে। এই পরিস্থিতি কাটাতে চান মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করছেন ভাঁড়ারের হাল ফেরাতে। তাই এবার ভরসা রাখতে চাইছেন ‘সম্পত্তিকর’ ক্ষেত্রের উপর। ইতিমধ্যেই বকেয়া সম্পত্তি কর আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি বলে সূত্রের খবর। কলকাতার এমন অনেক বাড়ি আছে যেখান থেকে সম্পত্তিকর আসছে না। আবার কয়েকটি জায়গা রয়েছে যেখানে সম্পত্তিকরের হিসাব ঠিকমতো হয়নি। তাই আদায় হচ্ছে না।
এদিকে কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, এই নানা কারণে সম্পত্তিকর পুরসভায় এসে পৌঁছচ্ছে না। এছাড়া অনেকে ইচ্ছা করেই সম্পত্তিকর পুরসভায় জমা করেননি। সেই অঙ্কটা বিপুল। আর এখন সেটাই আদায় করতে চায় পুরসভা। এই মোটা অঙ্কের করখেলাপিদের টাকা পুরসভায় এলে মুহূর্তে কোষাগারের স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে। হিসেব করে দেখা গিয়েছে, প্রায় চার হাজার কোটি টাকা সম্পত্তিকর বাবদ পাওনা রয়েছে পুরসভার। এবার সেই বকেয়া করের টাকা আদায়ে উদ্যোগী হয়েছে তারা। তবে সংশ্লিষ্ট করখেলাপিদের সঙ্গে আলোচনায় বসে সেই টাকা উদ্ধারের কথা ভাবা হয়েছে। মে মাস থেকেই কাজ শুরু হবে।
কেমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে? কলকাতা পুরসভা এই বিপুল অঙ্কের বকেয়া কর আদায়ে এবার উদ্যোগ নিচ্ছে। তাই মেয়র ফিরহাদ হাকিম একটি কমিটি গঠন করেন। যার নেতৃত্বে আছেন পুরসভার কমিশনার বিনোদ কুমার। এই কমিটিই বড় অঙ্কের বকেয়া করদাতাদের সঙ্গে কথা বলে কোষাগারের স্বাস্থ্য ফেরাতে চাইছেন। এই বিষয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘বড় অঙ্কের সম্পত্তিকর যাঁদের বকেয়া রয়েছে তাঁদের আমরা ডেকে আলোচনায় বসব। এই নিয়ে আদালতে বছরের পর বছর মামলা পড়ে রয়েছে। তাই মামলাকারীদের সঙ্গে কথা বলে যতটা সম্ভব আইনের পথে নিষ্পত্তি করা যায় সেটা কমিশনারকে বলেছি।’
আর কী জানা যাচ্ছে? কলকাতা পুরসভার আয়ের অনেকটাই আসে সম্পত্তিকর থেকে। তাই এই বকেয়া ফেলে না রেখে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। করখেলাপিদের সঙ্গে কথা বলে দুটি বিষয় সামনে আসবে। এক, কেন তিনি কর দিচ্ছেন না? দুই, কেউ যদি কিস্তি হিসাবে দিতে চান তাঁকে সেই ব্যবস্থাও করে দেওয়া হবে। যাতে পুরো বকেয়াই পুরসভার কোষাগারে এসে জমা হয়। আর এই টাকা আদায় হলেই অবসর নেওয়া পুরকর্মীদের অবসরকালীন টাকা দিয়ে দেওয়া যাবে। একইসঙ্গে কোষাগারের স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে।