গতবছর দুর্গাপুজো। সময়টা মনে পড়ছে? যেখানে মণ্ডপের সামনে যাওয়ার অনুমতি ছিল। কিন্তু ভেতরে প্রবেশের অনুমতি ছিল না। মণ্ডপ লাগোয়া স্টল দেওয়া যায়নি। পুজো ছোট করে আনতে হয়েছিল। কারণ করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এবার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে গোটা দেশে। আর তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীরা।
ইতিমধ্যেই কুমোরটুলির বহু মৃৎশিল্পী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে কাজের গতি কমেছে। আবার মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে লকডাউন হবে ধরে নিয়ে অনেকে বাড়ি ফিরে যেতে চাইছেন। সব মিলিয়ে ফের কঠিন পরিস্থিতির আশঙ্কা করছেন মৃৎশিল্পীরা। আইআইটি কানপুরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, অক্টোবর মাসেই দেশে আছড়ে পড়বে করোনার তৃতীয় ঢেউ। তবে তৃতীয় ঢেউয়ের প্রভাব সম্পর্কে এখনই কিছু বলতে পারছেন না গবেষকরা। কিন্তু উৎসব প্রিয় বাঙালির মনে সংশয় জাগছে, তাহলে কি এবারও গতবছরের মতো জৌলসহীন দুর্গাপুজো!
সংবাদসংস্থা পিটিআই–কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মৃৎশিল্পী সুজিত পাল বলেন, ‘বেশিরভাগ বিখ্যাত শিল্পীরা কিছু কাজ পেয়েছেন। তখন অবশ্য করোনাভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত ছিল না। কিন্তু এখন এই সংক্রমণ রক্তচক্ষু দেখাচ্ছে। তার জেরে বহু বিধিনিষেধ চালু হয়েছে।’ আইআইটি কানপুরের গবেষণা বলছে, মহারাষ্ট্র এখন সংক্রমণের শিখরে পৌঁছেছে। কিছুদিনের মধ্যেই সংক্রমণের শিখরে পৌঁছবে উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট, দিল্লি এবং পশ্চিমবঙ্গ। তারপর কমতে পারে সংক্রমণ।
পশ্চিমবঙ্গ সরকার ইতিমধ্যেই শপিং কমপ্লেক্স, সিনেমা হল, বার, রেস্তোরাঁ–সহ নানা কিছু বন্ধ করে দিয়েছে। সুজিত পাল দুটি বড় অর্ডার পেয়েছেন। কিন্তু যেভাবে করোনাভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত হয়েছে তাতে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘করোনা যদি আরও বাড়তে শুরু করে তাহলে বায়না হবে না। আর তা না হলে আয় কমবে। তার জেরে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীণ হতে হবে।’
কানপুরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে দেশের অধিকাংশ মানুষ ভ্যাকসিন পেয়ে যাবেন। কিন্তু শিশুরা তখনও ভ্যাকসিন পাবে না। তাই কী প্রভাব পড়বে তৃতীয় ঢেউয়ের তা আলোচনা সাপেক্ষ। কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান উপদেষ্টা ডঃ কে বিজয়রাঘবন বলেছেন, ‘সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ অনিবার্য। ভাইরাস দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছে। তবে প্রস্তুতি সেরে নিতে হবে। সব কিছু মেনে চললে তা আটকানো সম্ভব।’