পঞ্চায়েত নির্বাচনে হেরে গিয়ে নানা অভিযোগ তুলেছিলেন বিরোধীরা। আর গত বছরের ওই নির্বাচনের তথ্যকে ঢাল করেই এবার জবাব তলব করল নির্বাচন কমিশন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৯০ শতাংশ আসনে কেমন করে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফলাফল হল? দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসকের উদ্দেশে এই প্রশ্ন তুলেই ক্ষোভপ্রকাশ করল নির্বাচন কমিশনের ফুলবেঞ্চ। আর তারপরই পুলিশ–প্রশাসনকে ফুলবঞ্চের কড়া বার্তা, ‘নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করতে না পারলে বিজ্ঞপ্তি জারির আগেই বদলি নিয়ে নিন। একবার বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে গেলে, কমিশনের আইন ও নির্দেশ না মানলে আমরা বদলি করব।’
নির্বাচন কমিশনের ফুলবেঞ্চ রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল। তাঁদের কাছ থেকে নানা অভিযোগ শুনেছিল। যেখানে বিজেপি এবং সিপিএম এই বদলির প্রসঙ্গে কথা বলেছিল বলে সূত্রের খবর। আর তারপরই ফুলবেঞ্চের বার্তা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে যে এক দফায় ভোটের দাবি করা হয়েছে তা নিয়ে কোনও কথা বলেননি ফুলবেঞ্চের প্রতিনিধিরা। সব ঠিক থাকলে মার্চ মাসের ১৪ তারিখ নির্ঘণ্ট প্রকাশ করতে পারে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যেই কলকাতায় এসে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ডিএম, এসপি এবং পুলিশ কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক করলেন।
আরও পড়ুন: দৈনিক মজুরিতে চরম বৈষম্যের অভিযোগ মৎস্য দফতরে, বেতন পাচ্ছেন না অনেকে
এদিকে ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৯০ শতাংশ আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এবার সেই বিষয়টি সামনে নিয়ে আসে ফুলবেঞ্চ। কেমন করে তা সম্ভব হল? এই প্রশ্ন তোলা হয়েছে বলে খবর। সূত্রের খবর, বৈঠকে এই বিষয়ে তেমন কোনও জবাব দিতে পারেননি জেলাশাসক। তাই ফুলবেঞ্চের সদস্যরা জেলাশাসককে রীতিমতো ভর্ৎসনা করেন। জেলাশাসকদের কমিশনের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যে জেলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফলাফল নির্ধারিত হয়েছে, সেই জেলায় কেমন পদক্ষেপ করা হয়েছে তা নিয়ে রিপোর্ট দিতে হবে। প্রত্যেক পুলিশ জেলার সাপ্তাহিক রিপোর্টও লাগবে।
অন্যদিকে জেলাশাসক–পুলিশ সুপারদের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে উঠেছে সন্দেশখালি প্রসঙ্গ। তাই বৈঠকে পুলিশ কমিশনারের কাছে নির্বাচন কমিশন জানতে চায়, সন্দেশখালিতে কেন এমন পরিস্থিতি? জবাবে তিনি বলেছেন, ‘আমি এখানে নতুন এসেছি। ঘটনার সময় আমি দায়িত্বে ছিলাম না।’ এমনই কথোপকথন হয়েছে বলে সূত্রের খবর। সন্দেশখালি কাণ্ডের সময় যিনি বসিরহাটের পুলিশ কমিশনার ছিলেন, তিনি এখন বদলি হয়ে গিয়েছেন কালিম্পংয়ে। তারপরই কমিশনের পক্ষ থেকে নির্দেশ, প্রত্যেক জেলায় যেখানে শাহাজাহানের মতো ব্যক্তিরা আছে, তাঁদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। অপরাধীদের যেন ছেড়ে রাখা না হয়।