লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সুতরাং এখন দেশজুড়ে আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর হয়েছে। এই আবহে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সমান্তরাল অফিস চালাতে চাইছে বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের। আর তাই নির্বাচন কমিশনকে নানা তথ্যপ্রমাণ দিয়ে চিঠি লিখে নালিশ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এবার সেই চিঠির জবাবে পাল্টা চিঠি দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেই চিঠিতে এবার বোস নিজেই ফোঁস করে উঠেছেন রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে। সুতরাং লোকসভা নির্বাচনের মুখে আবার সংঘাতে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বনাম তৃণমূল কংগ্রেস বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে নির্বাচন কমিশন সেই চিঠি পেয়ে খোঁজখবর শুরু করেছিল। যে চিঠিতে লেখা হয়েছে, বাংলার রাজ্যপাল অবৈধভাবে লোকসভা নির্বাচনের কাজে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছেন। যা আসলে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের সমান। রাজ্যপাল হিংসা মুক্ত ভোট করার কথা বলে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মতো লোকসভা নির্বাচনেও সমান্তরাল প্রশাসন চালু করতে চাইছেন। আর তাই অবিলম্বে নির্বাচন কমিশন এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করুক। এই নালিশ ঠুকেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে নির্বাচন কমিশনে পাল্টা চিঠি দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগের জবাব দিলেন রাজ্যপাল। তবে সেই চিঠির পাশাপাশি রাজ্যপাল আজ, শনিবার একটি ভিডিয়ো বার্তা দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: সল্টলেক–নিউটাউনে বহু বাড়ি হেলে আছে, গার্ডেনরিচ কাণ্ডের পর বাড়ছে আতঙ্ক
অন্যদিকে লোগ সভা বলে একটি পোর্টাল খুলেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এই নিয়েও নালিশ ঠুকেছে তৃণমূল কংগ্রেস। নির্বাচন কমিশন যখন সবটা পরিচালনা করছে তখন রাজ্যপালের এমন কিছু খোলার অর্থ আদর্শ আচরণবিধির পরিপন্থী। তবে আজ ভিডিয়ো বার্তায় রাজ্যপাল স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘যে কেউ রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতেই পারেন। তবে এটা জেনে রাখা ভাল, রাজ্যপাল পশ্চিমবঙ্গের লোকসভা নির্বাচনে কোনও হস্তক্ষেপ করছেন না।’ তৃণমূল কংগ্রেসের বক্তব্য এটা হস্তক্ষেপ নয় তো কি! নিজের ইমেল আইডি দিয়ে জনগণকে যোগাযোগ করতে বলা হস্তক্ষেপের সামিল।
তবে লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে চিঠির পাল্টা চিঠিতে সংঘাত চরমে উঠতে চলেছে বলে সূত্রের খবর। লোকসভা নির্বাচনের তারিখ যত সামনে আসবে তত রাজ্যপাল বনাম তৃণমূল কংগ্রেস সংঘাত বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় রাজ্যের জনগণের সঙ্গে সংযোগ রাখার লক্ষ্যে রাজভবনে পিসরুম খুলেছিলেন রাজ্যপাল আনন্দ বোস। লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে রাজ্যের মানুষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে গত রবিবার ‘লোগ সভা’ পোর্টাল চালু করেছেন রাজ্যপাল। তবে ভিডিয়ো বার্তায় রাজ্যপালের দাবি, ‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাংলা হিংসা দেখেছিল। রাজ্যপালের উপস্থিতিতে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটেছিল। তাই লোগ সভা পোর্টালের মাধ্যমে সরাসরি মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলা ভয়ভীতি কাটানোর চেষ্টা মাত্র।’