বিজেপিতে যোগদানের পর প্রথম সমাবেশেই পুরনো দল তৃণমূল কংগ্রেস ও তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একযোগে আক্রমণ করলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। মনে করালেন, এই বিজেপির হাত ধরেই জন্ম হয়েছিল তৃণমূলের। সঙ্গে তাঁর দাবি, যে বিজেপির হাত ধরে তৃণমূল তৈরি হয়েছিল সেই বিজেপিই ধ্বংস করবে তৃণমূলকে।
এদিন শোভনবাবুর সুর প্রথম থেকেই ছিল চড়া। তিনি বলেন, ‘জেনে রাখুন ওসব মন্ত্রিত্ব হাওয়াই চটির মতো ছুঁড়ে ফেলতে পারি’। তাঁর দাবি, ‘২০১৮ সালে বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচন হতে দেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিনা নির্বাচনে একের পর এক জেল পরিষদ দখল করেছে তৃণমূল’।
মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এদিন কার্যত মিথ্যাচারের অভিযোগ করেন শোভন। বলেন, আবাসনমন্ত্রী থাকাকালীন এক বছর গীতাঞ্জলি প্রকল্পে কোনও ঘর তৈরি হয়নি। এই নিয়ে বিধানসভায় প্রশ্ন করেন এক বিধায়ক। প্রশ্নের কী জবাব দেব তা জানানোর জন্য বিধানসভায় আমাকে ডেকে পাঠান মমতা। আমি গেলে বলেন বলতে, ২৫ লক্ষ ঘর তৈরির জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। বিধানসভায় গিয়ে আমি সেকথা বলি। পিছন থেকে উঠে দাঁড়িয়ে মমতা বলেন, না ওটা ৪০ লক্ষ হবে। ১০ মিনিটের মধ্যে নিজের কথা বদলে ফেলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর বিশ্বাসযোগ্যতার কথা ভেবে সেদিন কোনও কথা বলিনি’।
এদিন ফিরহাদ হাকমিকেও কটাক্ষ করেন শোভন। বলেন, ‘একজনকে বলতে হচ্ছে আমি পাকিস্তানের বিরোধী। মিনি পাকিস্তান বলে এমন বিপদে পড়েছেন যে মুছতে মুছতে কালঘাম ছুটে যাচ্ছে।’
এদিনেও সভাতেও শোভন দাবি করেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেস যারা তৈরি করেছিল তাদের আর কোনও দাম নেই। তাই দলটার এই অবস্থা হয়েছে।’ এমনকী কয়লা পাচারের টাকা কোথায় যায় তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। ছাড়েননি মমতার শিল্পীসত্ত্বাকেও। বলেন, 'এমন ছবি আঁকেন যে নীচে নাম না লিখে দিলে চেনা যায় না।
শেষে বলেন, ‘বিজেপির হাত ধরে তৃণমূল তৈরি হয়েছিল। বিজেপির হাতেই তা ধ্বংস হবে।’
একই সঙ্গে এদিন আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি কর্মীদের একজোট হয়ে কাজ করার ডাক দেন তিনি। বলেন, ‘মমতা যা করছেন তাতে মানুষ এমনিতেই আমাদের হাতে একের পর এক বিধানসভা তুলে দেবেন।’