রাজ্যে বিজেপি যত শক্তিশালী হচ্ছে ততই তৃণমূলের অন্দরে বাড়ছে বিশৃঙ্খলা। প্রকাশ্যে একে অপরের বিরুদ্ধে মুখ খুলে দলকে অস্বস্তিতে ফেলছেন একের পর এক নেতা। সেই কোন্দল সামাল দিতে ব্যর্থ দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বও। এই পরিস্থিতিতে দলের মুখপাত্র বদলের নিদান দিলেন মমতা। বুধবার কালীঘাটে তৃণমূলনেত্রীর বাড়িতে এক দলীয় বৈঠকে এই নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সঙ্গে সুব্রত বক্সি ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নতুন মুখপাত্রদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
গত কয়েক মাসে কখনও সংবাদমাধ্যমে, কখনও সোশ্যাল মিডিয়ায় একে অপরের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর সব অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল নেতারা। তা সে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় – তাপস রায়ের দ্বন্দ হোক বা অর্জুন সিং - সোমনাথ শ্যামের বাগযুদ্ধ। কিংবা বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী ও দলের জেলা পরিষদ সদস্য রুনা খাতুনের লড়াই, বারবার অস্বস্তিতে পড়েছে দল। অর্জুন – সোমনাথের বিবাদ থামাতে নৈহাটি গিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরতে হয়েছে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিকে।
দলে বিশৃঙ্খলা যখন ক্রমশ বাড়ছে তখন মুখপাত্র বদলের নির্দেশ দিলেন মমতা। এদিন বৈঠকে তিনি বলেন, ‘কথায় কথা বাড়ছে। সবাই মুখপাত্র হয়ে উঠেছেন। এটা করা যাবে না। যেখানে সেখানে যাকে তাকে যা খুশি তাই বলা যাবে না।’ এর পরই অভিষেক ও সুব্রত বক্সিকে মুখপাত্রদের নতুন তালিকা তৈরির নির্দেশ দেন তিনি। এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় যা খুশি তাই পোস্ট করা যাবে না বলেও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। মমতার নির্দেশ, কোনও বিষয়ে ক্ষোভ থাকলে দলের ভিতরে জানাতে হবে। কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুললে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করলে তার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।
এদিনের বৈঠকে মূলত আলোচনা হয় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন বিধানসভা কেন্দ্রে দলের অবস্থা নিয়ে। গত লোকসভা নির্বাচনে মেদিনীপুর আসনটি তৃণমূলের থেকে কেড়ে নিয়েছিল বিজেপি। তার পর বিধানসভা নির্বাচনে যদিও জেলায় তৃণমূলের স্বাস্থ্যোদ্ধার হয়। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে মোদী ঝড়ে তৃণমূল কুপো কাত হওয়ার সম্ভাবনাও প্রবল। তাই বিধানসভা কেন্দ্র অনুসারে দলীয় কর্মীদের সংগঠন চাঙ্গা করার টোটকা বলে দেন মমতা। সঙ্গে দলীয় নেতাদের শৃঙ্খলাবদ্ধ হওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।