ডেঙ্গি বাড়ছে। তার সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। এই পরিস্থিতিতে সচেতনতার প্রচারে বেরিয়ে মেজাজ হারালেন কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ সদস্য। আর মেজাজ হারিয়ে সপাটে এক নিরাপত্তারক্ষীকে চড় কষিয়ে দিলেন। ব্যস, মুহূর্তের মধ্যে এই খবর ছড়িয়ে পড়ল সর্বত্র। তবে এই চড় মারার কথা স্বীকার করেছেন মেয়র পারিষদ সদস্য। কিন্তু দমে যাননি। যাঁকে চড় কষালেন মেয়র পারিষদ সদস্য তিনি একদিকে বেহালার বাসিন্দা অন্যদিকে একটি আবাসনের নিরাপত্তারক্ষী। আর মেয়র পারিষদ সদস্যের নাম তারক সিং।
কেন এখানে জল জমছে? এই প্রশ্নই করেছিলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ সদস্য তারক সিং। কিন্তু জবাব না পেয়ে সপাটে চড় কষালেন ওই যুবক নিরাপত্তা রক্ষীকে। যদিও এই কাজ করার পর বিন্দুমাত্র অনুশোচনা দেখা গেল না তারক সিংয়ের মধ্যে। বরং তিনি সংবাদমাধ্যমে দাবি করেন, ‘ডেঙ্গি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। এই নিয়ে বারবার সচেতন করা সত্ত্বেও মানুষ তা শুনছে না। মেয়র পারিষদ নয়, মানুষ হিসেবে চড় মেরেছি। মনে হলে যান আমার নামে মামলা করুন।’ এই ঘটনা এখন গোটা শহরে চাউর হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিম কার্যত অস্বস্তিতে পড়েছেন। কারণ তারক সিং তাঁর পারিষদ সদস্য।
আর কী জানা যাচ্ছে? বর্ষা শুরু হতেই ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। শহর থেকে জেলা সর্বত্রই ডেঙ্গি আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। এই আবহে আজ, শনিবার ডেঙ্গি প্রতিরোধে নানা জায়গায় সচেতনতামূলক প্রচার চলছিল। ১১৮ নম্বর ওয়ার্ড, যা মেয়র পারিষদ সদস্য তারক সিংয়ের নিজের ওয়ার্ড ঘুরে দেখছিলেন। এলাকায় অবস্থিত নির্মীয়মান আবাসনগুলির অবস্থা থেকে শুরু করে জঞ্জাল জমে থাকার বিষয়টিও খতিয়ে দেখছিলেন তিনি। সঙ্গে থাকা ঠিকাকর্মীদের বোঝানের চেষ্টা করছিলেন যাতে এলাকায় জল জমে না থাকে। তাহলে মশার লার্ভা তৈরি হবে এবং সেখান থেকে ডেঙ্গির উৎপত্তি।
আরও পড়ুন: ভাম বিড়াল কামড়ে দিচ্ছে! কলকাতা পুরসভার মেয়রকে অভিযোগ জানালেন বাসিন্দারা
ঘটনাটি ঠিক কী ঘটেছে? এই প্রচার করতে গিয়ে একটি নির্মীয়মাণ বাড়িতে যান মেয়র পারিষদ সদস্য তারক সিং। ওই বাড়ির নানা জায়গায় তখন জল জমে ছিল। এটা দেখে তারক সিং ওখানের নিরাপত্তা রক্ষীকে জিজ্ঞাসা করেন, কেন জল জমে রয়েছে? উত্তরে ওই নিরাপত্তারক্ষী বলেন, ‘বৃষ্টি হয়েছে। তাই জল জমেছে। রোদ উঠলেই শুকিয়ে যাবে।’ এই কথা শুনে মেজাজ ঠিক রাখতে পারেননি তারক সিং। আর সপাটে তাঁকে চড় মারেন তিনি। তারপর বলেন, ‘এই ধরনের ঘটনা পরে দেখতে পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওখানে জল জমে। বারবার বলা সত্ত্বেও শোনে না। ৮টা লোক মারা গিয়েছে কলকাতায়। তবু কেউ কথা শুনছে না। আমি যদি অপরাধ করে থাকি ওই লোকটাকে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে মামলা করুন। লোক মরে যাচ্ছে, আপনারা সমালোচনা করছেন। মেয়রের পদত্যাগ চাইবেন। আমরা খালি ফাইন করে চুপ করে বসে থাকব? একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত গার্জেনের কাজ চড় মারা। চড় মেরেছি ঠিক আছে।’