মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন মেন ফর গার্লস। এই নামটি সঙ্গে জড়িয়ে আছে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এবং স্বামী বিবেকানন্দের নাম। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের তৈরি স্কুলকে অবলুপ্তির হাত থেকে বাঁচাতে উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার। যা একটা বড় পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এই স্কুলে চালু হচ্ছে ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষাব্যবস্থা। এই স্কুলে বাংলার পাশাপাশি শুরু হয়েছে ইংরেজি মাধ্যমও। আর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে যে কয়েকটি বাংলা মাধ্যম স্কুলে ইংরেজি মাধ্যম চালু করা হচ্ছে, এটি তার অন্যতম। বাংলা মাধ্যমের পড়ুয়ার অভাবে ধুঁকছিল এই ঐতিহ্যশালী স্কুল। তার অস্তিত্ব রক্ষায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে আগামী ২০২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকেই চালু হচ্ছে ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষা। ১৮৬৪ সালে ৩৯ নম্বর শঙ্কর ঘোষ লেনে এই বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। মূল উদ্যোক্তা ছিলেন পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। তাঁর মৃত্যুর আগে পর্যন্ত এই স্কুলের সুপারিন্টেনডেন্ট ছিলেন তিনি। দোতলা বাড়িটি ঠাকুর পরিবারের থেকে ভাড়া নেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুল সূত্রে খবর, ১৯৫৪ সালে সেটি ঠাকুর পরিবারের পক্ষ থেকে কিনে নেওয়া হয়। দোতলা বাড়িটির প্রবেশপথে লেখা ‘মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন’। বিদ্যাসাগরের এই স্কুলে স্বামী বিবেকানন্দও ছাত্র ছিলেন। পরে শিক্ষকতাও করেন। তবে এই স্কুল পরে মেয়েদের জন্য হয়ে যায়।
অন্যদিকে উত্তর ও মধ্য কলকাতায় বিদ্যাসাগর কলেজ, মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশন সবই গড়ে ওঠে বিদ্যাসাগরের উদ্যোগে। বিদ্যাসাগর ইনস্টিটিউশন নামে এক ট্রাস্টের অধীনে রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানগুলি। এই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বিপাশা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি ভাষার প্রাধান্য বাড়ছে। এলাকার মানুষজনের অনুরোধ ছিল, তাঁদের মেয়েরা সরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়তে চায়। তাই পরিচালন সমিতি এই সিদ্ধান্ত নেয়। বাংলা এবং ইংরেজি দুই মাধ্যমই থাকছে। এখানে স্মার্ট ক্লাসরুমের ব্যবস্থাও থাকছে। আর যোগ ব্যায়াম, স্পোকেন ইংলিশ, মার্শাল আর্ট, সংগীত, আবৃত্তি এবং হাতের কাজ বিনামূল্যে শেখানো হবে।’
আরও পড়ুন: সাঁকরাইলে বস্তাবন্দি বাচ্চার দেহ উদ্ধার, গঙ্গার পাড়ে নগ্ন কন্যা দেখে স্তম্ভিত নাগরিকরা
এছাড়া সরকারি সিদ্ধান্তে খুশি পরিচালন সমিতিও। সর্বশিক্ষা মিশন ওই বিল্ডিং সংস্কারে হাত দিয়েছে। সেখানে সব কিছু রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে। স্কুলের পিছনে খরচা করা হচ্ছে। এক অফিসার জানান, দুটো শ্রেণিকক্ষ দ্রুত সংস্কার করা হচ্ছে। ২ জানুয়ারি সেখানেই চালু হবে প্রাথমিক মানের ইংরেজি মাধ্যম স্কুল। নিয়োগ করা হবে নতুন শিক্ষকও। এখানে মেয়েরা এবার থেকে বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি ভাষাও শিখে দক্ষ হতে পারবে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘এই এলাকার বহু দিনের দাবি ছিল, এখানে ইংরেজি মাধ্যম স্কুল চাই। অবশেষে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সেই দাবি মিটতে চলেছে।’