বাংলা নিউজ > বাংলার মুখ > কলকাতা > বিএল সন্তোষকে ছেঁটে ফেলার প্রস্তুতি শুরু, কেন এমন সিদ্ধান্ত মোদী–শাহের?‌

বিএল সন্তোষকে ছেঁটে ফেলার প্রস্তুতি শুরু, কেন এমন সিদ্ধান্ত মোদী–শাহের?‌

বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষ

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়ার সঙ্গে সন্তোষের সম্পর্ক অত্যন্ত খারাপ। মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন সিদ্ধারামাইয়া প্রভাব খাটিয়ে বিএল সন্তোষকে কর্ণাটক ছাড়া করেছিলেন। পাল্টা সর্বভারতীয় বিজেপির শীর্ষপদের ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে সন্তোষ মাঝপথে সিদ্ধারামাইয়াকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেন বলে সূত্রের খবর।

কংগ্রেস–মুক্ত ভারত হয়নি। বরং মোদী ক্যারিশ্মা ফিকে হয়ে গিয়েছে কর্ণাটক হাতছাড়া হওয়ায়। এই আবহে বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। তাতে প্রভাব পড়তে পারে। তাই ড্যামেজ কন্ট্রোলে এবার বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষকে ছেঁটে ফেলার প্রস্তুতি শুরু করেছেন মোদী–শাহ বলে সূত্রের খবর। এই বিএল সন্তোষ বাংলার দায়িত্বেও কাজ করেছেন। এখানকার ভাঙা সংগঠন নিয়ে তিনিই প্রথম রিপোর্ট দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। যদিও তারপরও বাংলার সংগঠন বিজেপি ঠিক করতে পারেনি।

এদিকে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে নতুন ‘সংগঠন মন্ত্রী’ নিয়োগ করতে চলেছে আরএসএস। আর তা যদি ঘটে তাহলে বাংলা–সহ দেশের একাধিক রাজ্যে দলের ক্ষমতার ভরকেন্দ্র বদলে যাবে। সন্তোষের জন্য সম্ভাব্য এই বিদায়ঘণ্টায় রীতিমতো শঙ্কিত বঙ্গ–বিজেপির একাধিক প্রভাবশালী নেতা বলে সূত্রের খবর। বিজেপির ‘আদি নেতা’দের অভিযোগ, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে সন্তোষ এবং আরএসএস–এর তৎকালীন ‘ক্ষেত্র প্রচারক’ প্রদীপ যোশি বাংলায় মৌরসিপাট্টা চালাতেন। এই দু’জনের সঙ্গে মতবিরোধ ছিল বিজেপির তৎকালীন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং সংগঠন সম্পাদক সুব্রত চট্টোপাধ্যায়ের। যদিও পরে দিলীপ–সুব্রতকে সরে যেতে হয়। সন্তোষকে ‘ম্যানেজ’ করে রাজ্য কমিটিতে জায়গা করে নেওয়া একাধিক নেতারা এখন পদ হারানোর আশঙ্কায় ভুগছেন।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ অন্যদিকে সর্বভারতীয় কমিটি ও রাজ্য কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) পদে আরএসএসের মনোনীত ব্যক্তিকে বসানো হয়। এখন বিএল সন্তোষের বিদায় ঘণ্টা বেজে গিয়েছে। মোদী–শাহ তাঁর উপর এতটাই চটেছেন যে কর্ণাটক সন্তোষের নিজের রাজ্য হওয়া সত্ত্বেও নির্বাচনে তাঁকে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়ার সঙ্গে সন্তোষের সম্পর্ক অত্যন্ত খারাপ। মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন সিদ্ধারামাইয়া প্রভাব খাটিয়ে বিএল সন্তোষকে কর্ণাটক ছাড়া করেছিলেন। পাল্টা সর্বভারতীয় বিজেপির শীর্ষপদের ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে সন্তোষ মাঝপথে সিদ্ধারামাইয়াকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেন বলে সূত্রের খবর।

কেন চটেছেন মোদী–শাহ? নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিজেপির আদি নেতা বলেন, ‘‌বিএল সন্তোষ ওই পদে বসে বাংলা–সহ একাধিক রাজ্যে ‘নিজের লোক’ বসাতে শুরু করেন। বঙ্গ বিজেপির এখন রাজ্য কমিটিতে তাঁর প্রভাব অনেকটাই। তাই সন্তোষ পদ হারালে আবার দিলীপ ঘোষের ‘লবি’ ক্ষমতাশালী হয়ে উঠতে পারে। বাংলা থেকে একমাত্র বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার কর্ণাটকে ভোট প্রচারে গিয়েছিলেন। ‘সংসদরত্ন’ পাওয়া এই সাংসদ যে প্রচারে তেমন দাগ কাটতে পারেননি সেটা ফলাফলেই স্পষ্ট। তাই আজকের দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সন্তোষের জন্যই বলে জানতে পেরে চটেছেন মোদী–শাহ।’‌

বন্ধ করুন