মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে ‘ঝামেলা এড়াতে’ স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের জারি করা নির্দেশিকা ঘিরে নতুন ঝামেলা। সমস্ত ছাত্রের রেজিস্ট্রেশন সম্পূর্ণ হয়েছে, এই হলফনামা দিয়ে মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড ক্যাম্প অফিস থেকে তুলতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছিল পর্ষদ। অ্যাডমিট বিলি শুরু হওয়ার ৩ দিন পরেও এহেন হলফনামা দিয়ে অ্যাডমিট কার্ড তুলতে অস্বীকার করেছেন রাজ্যের ৫৩টি স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা। ওদিকে ২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে চলেছে মাধ্যমিক। পরীক্ষার আগে কবে ওই সব স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা অ্যাডমিট কার্ড হাতে পারেন তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
গত ২২ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে স্কুলগুলিতে মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড বিলি। তবে তার আগে জারি এক নির্দেশিকায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ জানিয়েছিল, ২০২৫ সালের কোনও মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন বাকি নেই, ১০ টাকার স্ট্যাম্প পেপারে এই মর্মে প্রধান শিক্ষককে হলফনামা দিয়ে অ্যাডমিট কার্ড দিয়ে সংগ্রহ করতে হবে স্কুলগুলিকে। নিজে হাতে হলফনামার বয়ান লিখে সই করতে হবে প্রধান শিক্ষকদের। নইলে সেই স্কুলকে দেওয়া হবে না মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড।
প্রধান শিক্ষকদের অভিযোগ, পর্ষদের এই নির্দেশ অবমাননাকর। স্কুলে বহু ছাত্রছাত্রী থাকে যাদের খোঁজ পাওয়া যায় না। তাদের রেজিস্ট্রেশন নিশ্চিত করবে কে? এটা কি প্রধান শিক্ষকদের কাজ?
পর্ষদের পালটা যুক্তি, প্রতি বারই রেজিস্ট্রেশন হয়নি বলে শেষ মুহূর্তে বহু ছাত্রছাত্রী পর্ষদের দফতরে এসে ধরনা দেন। ওদিকে পরীক্ষার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিয়ে তখন ব্যস্ত থাকেন আধিকারিকরা। ওদিকে ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তাদের রেজিস্ট্রেশনের কাজেও হাত লাগাতে হয়। সব মিলিয়ে অব্যবস্থা তৈরি হয় পর্যদের দফতরে।
তবে রাজ্যের ৫৩টি স্কুলের প্রধান শিক্ষকরা বিতর্কিত ওই হলফনামা জমা দিয়ে মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড সংগ্রহ করেননি। এর মধ্যে কলকাতা রিজিয়নের ৩৭টি, মেদিনীপুর রিজিয়নের ৭টি, বর্ধমান রিজিয়নের ৮টি ও উত্তরবঙ্গ রিজিয়নের ১টি স্কুল রয়েছে। এই সব স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা কবে কী ভাবে অ্যাডমিট কার্ড হাতে পাবেন তা এখনও অজানা।
এই নিয়ে ABTA নেতা তথা স্কুলের প্রধান শিক্ষক অশোক পাল বলেন, ‘ওই অবমাননাকর হলফনামা দিয়ে প্রধান শিক্ষকরা ঠিক কাজই করেছেন। প্রধান শিক্ষকরা ছাত্রছাত্রীদের প্রতি অত্যন্ত যত্নশীল। সরকার হলফনামা দিতে বলে নিজেদের দায় প্রধান শিক্ষকদের ঘাড়ে চাপাতে চেয়েছে। আমি ওই অবমাননাকর হলফনামা জমা দিইনি। আমি সাদা কাগজে নিজের বয়ানে লিখেছি, যারা রেজিস্ট্রেশন করাতে ইচ্ছুক ছিল তাদের প্রত্যেকের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে। অনিবার্য কারণে কেউ রেজিস্ট্রেশন করাতে না পারলে ভবিষ্যতে তার বিষয়টিও বিবেচনা করা হবে।’
ওদিকে পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছে, ওই হলফনামা নিয়ে প্রধান শিক্ষকদের একাংশ আপত্তি জানানোর পর তা সংশোধন করা হয়েছে। হলফনামায় লিখতে হবে, যারা স্কুলের ডাকে সাড়া দিয়েছে, তাদের সবার রেজিস্ট্রেশন হয়ে গিয়েছে।