সত্যজিৎ রায়ের বিখ্যাত ছবি ‘সোনার কেল্লা’র কিছুটা অংশ শুটিং হয়েছিল কলকাতার ভবানীপুরের একটি বাড়িতে। স্মৃতি বিজড়িত সেই বাড়িটি হঠাৎই ভেঙে পড়ল। কলকাতা পুরসভার তরফে আগেই এই বাড়িটিকে বিপদজনক ঘোষণা করা হয়েছিল। বাড়িতে শুধুমাত্র একজনই ছিলেন। তিনি আহত হননি। বাড়ি ভাঙার পরেই তাঁকে উদ্ধার করা হয়েছে। কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার ভোর ৩ টে নাগাদ ওই বাড়িটি ভেঙে পড়ে। সোনার কেল্লা ছবিতে মুকুলের দ্বিতীয় বাড়ি হিসেবে এই বাড়িটিকে দেখিয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়। ফলে বাড়িটি ভেঙে পড়ায় স্বাভাবিকভাবেই মন খারাপ এলাকার বাসিন্দাদের।
আরও পড়ুন: কলকাতায় ৩ তলা থেকে ভেঙে পড়ল বারান্দার একাংশ, মৃত্যু মহিলার, আশঙ্কাজনক ১
এদিন বাড়ি ভেঙে পড়ার খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছন ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। তিনি পুলিশের কাছে খবর দেন। জানা গিয়েছে, ওই বাড়িতে তিনটি পরিবার বাস করত। তবে কলকাতা পুরসভার তরফে বাড়িটিকে বিপজ্জনক ঘোষণা করার পরেই দুটি পরিবার অন্যত্র সরে যায়। শুধুমাত্র একজন ওই বাড়িতে থাকছিলেন। শুক্রবার বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়েছিল। তারপর শনিবার পুরো বাড়িটি ভেঙে পড়ে। ২০২২ সালে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর একটি সংশোধনী এনে এই তিনজনকে ভাড়াটে শংসাপত্র দিয়েছিল। ফলে ওই জায়গায় কোনও নির্মাণ হলে শংসাপত্র দেখিয়ে ভাড়াটিয়ারা সেখানে জায়গা পেতে পারেন। জানা গিয়েছে, ওই বাড়িটির ভাড়াটিয়াদের একজন ছয় বছর আগে ছেড়েছেন অন্য জন চেয়েছ দু মাস আগে।
প্রসঙ্গত, গত মাসে বিপজ্জনক বাড়ির একাংশ ভেঙে মৃত্যু হয় এক মহিলার। ঘটনাটি ঘটেছিল জোড়াবাগান থানা এলাকায় কলকাতার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিটে। রাতে ওই পুরনো বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ে। তাতে চাপা পড়ে মৃত্যু হয় ওই মহিলার। এছাড়ও দুজন আহত হন। অন্যদিকে, জুলাই মাসে রবীন্দ্র সরোবর থানা এলাকার ৩ নম্বর লেক কলোনিতে একটি পরিত্যক্ত পাম্প হাউস ভেঙে মৃত্যু হয়েছিল আরও এক ব্যক্তির। মৃতের নাম ছিল পাপ্পু দাস । বহু পুরনো ওই পাম্প হাউসটি জরাজীর্ণ অবস্থায় ছিল। সেই পাম্প হাউসেই অস্থায়ী আস্তানা গড়েছিলেন ওই ব্যক্তি। এরপর আচমকা সেই পাম্প হাউস ভেঙে পড়ে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছিল।
উল্লেখ্য, বিপজ্জনক বাড়ি নিয়ে চিন্তিত কলকাতা পুরসভা। বর্ষাকালে বিপজ্জনক বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। পুরসভার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কলকাতায় প্রায় তিন হাজারের কাছাকাছি বিপজ্জনক বাড়ি রয়েছে। যার মধ্যে ৫০০টির অবস্থা খারাপ। ইতিমধ্যেই বর্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে। ফলে বিপজ্জনক বাড়িগুলি নিয়ে চিন্তা বেড়েছে কলকাতা পুরসভার।