শীতের রাতে রুম হিটার ব্যবহার করতে গিয়ে ঘটল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। রুম হিটার থেকে আগুন লেগে মৃত্যু হল বৃদ্ধার। ঘটনাটি ঘটেছে বেহালা থানা এলাকার নফরচন্দ্র দাস রোডে। মৃতার নাম পূর্ণিমা দে (৮২)। গভীর রাতে বৃদ্ধার চিৎকার শুনে তার ঘরে ছুটে যান পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। আগুনে পুড়ে গুরুতর জখম হন বৃদ্ধা। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: শীতের রাতে দিল্লির আবাসনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, আগুনে পুড়ে মৃত্যু ৫ জনের
পুলিশ এবং পারিবারিক সূত্র জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাত দেড়টা নাগাদ। তিনি তিনতলার বাড়িতে দুই ছেলে বৌমার সঙ্গে থাকতেন। সোমবার রাতে সকলের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করার পর নিজের তেতলার ঘরে শুতে গিয়েছিলেন ওই বৃদ্ধা। শোওয়ার সময় তিনি রুম হিটার চালিয়েছিলেন। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, বৃদ্ধা প্রতিদিনই রুম হিটার চালিয়ে ঘুমোতেন। এরপর তিনি নিজেই কয়েক ঘণ্টা পর উঠে রুম হিটার বন্ধ করে দিতেন। এদিনও হিটার চালিয়ে ঘুমোতে গিয়েছিলেন। তারপরে মাঝ রাতে বৃদ্ধা চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকেন। সেখানে ছুটে গিয়ে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন আগুনে জ্বলছে ঘর। এরপর কোনওভাবে তারা আগুন নিভিয়ে প্রথমে ওই বৃদ্ধাকে বেহালার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে বাইপাসের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় দীর্ঘ সময় ধরে অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়ায় অভিযোগ তুলেছেন পরিবারের সদস্যরা। তাদের অভিযোগ, অ্যাম্বুলেন্সে ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু পুড়ে যাওয়ার কথা শুনে কোনও অ্যাম্বুলেন্স আসতে চায়নি। শেষে এটি বেসরকারি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স এসে বৃদ্ধাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
পারিবারিক সূত্র জানা গিয়েছে, পূর্ণিমা দেবীর দুই ছেলে বেসরকারি সংস্থার কর্মী। পাঁচ বছর আগে এই রুম হিটার কেনা হয়েছিল। মূলত ঠান্ডার সমস্যা থাকায় পূর্ণিমার স্বামী রুম হিটার ব্যবহার করতেন। তবে ২০২০ সালে তার স্বামীর মৃত্যু হয়। তারপর থেকে তিনি সেটি ব্যবহার করছিলেন। যদিও কীভাবে রুম হিটারে আগুন লাগল সে বিষয়টি এখনও জানতে পারেনি পুলিশ। তবে শর্ট সার্কিটের ফলে আগুন লাগার প্রমাণ মেলেনি। সে ক্ষেত্রে রুম হিটারটি অতিরিক্ত গরম হয়েও আগুন লাগার ঘটনা হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। তদন্তকারীদের অনুমান, রুম হিটারের সংস্পর্শে আসলে প্রথমে বৃদ্ধার চাদরে আগুন ধরে যায়। তা থেকেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ঘুমের মধ্যে বৃদ্ধা তা বুঝে উঠতে পারেননি। এই ঘটনায় বুধবার এনআরএস হাসপাতালের বৃদ্ধার দেহের ময়নাতদন্ত করে পুলিশ। তারপর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে।