অনিয়ম রুখতে অনলাইনে বিল্ডিং প্ল্যান জমা দেওয়ার পদ্ধতি চালু করেছিল কলকাতা পুরসভা। তবে অনলাইন পদ্ধতি নিয়েও বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিযোগ আসছিল। সেই কারণে আবার পুরনো পদ্ধতিতে ফিরে গেল কলকাতা পুরসভা। শুক্রবার মেয়র পারিষদের বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি বেআইনি বাড়ি ভাঙা নিয়েও মেয়র পারিষদদের নিয়ে একটি অভিন্ন নীতি তৈরি করা হবে বলে এদিনের বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় টিম তৈরির সিদ্ধান্ত মেয়রের, কলকাতা পুরসভার বেআইনি নির্মাণ ভাঙার অভিযান
পুরসভা সূত্রের খবর, অনলাইনে বিল্ডিং প্ল্যান জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। তাছাড়া অনলাইনে বিল্ডিং প্ল্যান জমা দেওয়ার পরে বেআইনি নির্মাণ বাড়ছে। এদিন বৈঠকে এ বিষয় নিয়ে অভিযোগ তোলেন মেয়র পারিষদরা। সেই কারণে অনলাইনে বিল্ডিং প্ল্যান আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা। এর ফলে অফলাইনে জমা নেওয়া হবে বিল্ডিং প্ল্যান অর্থাৎ হাতে কলমে লিখেই বিল্ডিং প্ল্যান জমা দিতে পারবেন এলবিএসরা। যদিও অনলাইনে বিল্ডিং প্ল্যান জমা দেওয়ার জন্য কয়েক বছর আগে এই পদ্ধতি চালু হয়েছিল। সেই সময় কলকাতার মেয়র ছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। তার জন্য অবশ্য খরচ হয়েছিল কয়েক কোটি টাকা। এর পাশাপাশি সব ক্ষেত্রেই অনলাইন ব্যবস্থার উপর জোর দিতে চাইছে পুরসভা । তা সত্ত্বেও কেন পুরনো পদ্ধতিতে পুরসভা ফিরে যেতে চাইছে তা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন তুলেছেন ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ।
এর পাশাপাশি এদিনের বৈঠকে বেআইনি বাড়ি ভাঙার নিয়েও আলোচনা হয়েছে। মেয়র পারিষদদের বৈঠকে এদিন এনিয়ে তুমুল হট্টগোল হয়। উল্লেখ্য, মেয়র ফিরহাদ হাকিম নিজেই বার বার বার্তা দিয়েছেন যেকোনওভাবে বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে হবে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু এলাকায় বেআইনি নির্মাণ ভেঙেছে কলকাতা পুরসভার কর্মীরা। বেশ কিছু জায়গায় এনিয়ে সমস্যার মধ্যেও পড়তে হয়েছে পুরকর্মীদের। এদিনের বৈঠকে মেয়র পারিষদ বৈশ্বানুর চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, তাঁকে না জানিয়ে তাঁর এলাকায় একটি নির্মাণ ভাঙা হয়েছে। সেই সময় তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সে ক্ষেত্রে কেন তাঁকে জানানো হয়নি? তা নিয়ে তিনি প্রশ্ন করেন। এর পাশাপাশি অফিসারদের কাছ থেকে কোথায় কোথায় বেআইনি বাড়ি রয়েছে তার তালিকা তিনি চেয়ে পাঠান।
এপ্রসঙ্গে এই দিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে মেয়র পারিষদরা মিলে এটি নীতি তৈরি করবেন। সেইমতোই বেআইনি বাড়ি ভাঙা হবে। অফিসাররা সেই নীতি মেনে চলবেন। যদিও এদিনও বেআইনি নির্মাণ ভাঙা নিয়ে বার্তা দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তাঁর বক্তব্য, কোনওভাবে বেআইনি নির্মাণকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। অবিলম্বে বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে হবে। এ প্রসঙ্গে নিজের গার্ডেনরিচ এলাকার কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, তাঁর এলাকাতেও বেশ কয়েকটি বেআইনি বাড়ি ভাঙা হয়েছে। সুতরাং বেআইনি ভাঙার বাড়ি ভাঙার ক্ষেত্রে মোটেও পিছু হটা যাবে না।