বাংলার মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকার কাছে এবার রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে চিঠি এল। এই চিঠি নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কারণ এই চিঠিতে রাজ্য সরকারের বিষয়ে তেমন কিছু লেখা নেই। বরং একজন আইনজীবীর অভিযোগ সম্পর্কে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা আছে। যা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার স্বামীর অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বাংলার মুখ্যসচিবের কাছে চিঠি এসেছে রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে। কিন্তু এমন চিঠি কেন এল? সেটা ভাবিয়ে তুলেছে নবান্নকে।
এদিকে বুধবার এই চিঠি এসেছে বলে খবর। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই চিঠির খবর পাওয়া গিয়েছে। সূত্রের খবর, রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে নবান্নে এই চিঠি পাঠানো নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হতে শুরু করেছে। ওই আইনজীবীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে সেটা বিচারপতির স্বামী প্রতাপচন্দ্র দে’কে যেন জানানো হয় বলে রাষ্ট্রপতি ভবনের চিঠিতে লেখা আছে। যেখানে আদালতের নির্দেশে আইনজীবী প্রতাপচন্দ্র দে’র বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে সেখানে রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে চিঠি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এই চিঠি হাতে পেয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব হতবাক। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে তিনি কাজ শুরু করেছেন।
অন্যদিকে সল্টলেকের একটি পারিবারিক সম্পত্তির মামলায় প্রতাপচন্দ্র দে’কে সিআইডি বারবার তলব করেছেন। প্রথমে অসহযোগিতা করলেও পরে সাড়া দেন তিনি। তার পরেই সেখান থেকে ঘুরে এসে প্রতাপচন্দ্র দে অভিযোগ করেন, সাক্ষী হিসেবে ডেকে পাঠিয়ে তাঁর বিচারপতি স্ত্রীর নামে অসত্য বয়ান দিতে সিআইডি চাপ দিচ্ছে। আর মানসিক নির্যাতন করেছে। আর এই অভিযোগ তুলে প্রতাপচন্দ্র দেশের প্রধানমন্ত্রী, রাজ্যের রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতিকেও চিঠি পাঠিয়েছিলেন। সেই চিঠির প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে মুখ্যসচিবকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। যদিও এই অভিযোগ ওঠার পরই সিআইডি প্রেস বিবৃতি দিয়ে স্পষ্টভাষায় জানিয়েছিল, তারা মানসিক নির্যাতন করেনি। বিচারপতির নামে অসত্য বয়ান চাওয়ার অভিযোগও ঠিক নয়।
আরও পড়ুন: ছেলে–মেয়েকে কুয়ো ফেলে খুন করল মা, নিজেও আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা, আলোড়ন তুঙ্গে তামিলনাড়ুতে
কিন্তু সেটা করলে কি হবে! বিচারপতি স্ত্রীর স্বামী তথা আইনজীবী বলে কথা। তাঁর করা অভিযোগের তো দাম আছে। তাই বিষয়টি দেখতে বলেছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। এই চিঠি রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছে আসায় খানিকটা স্বস্তি মিলেছে আইনজীবী প্রতাপচন্দ্র দে’র। তবে বিষয়টি এখন আরও গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় চলে গেল। একদিকে সিআইডি তদন্ত অপরদিকে মুখ্যসচিব দেখবেন বিষয়টি। সুতরাং আইনজীবী প্রতাপচন্দ্র দে একেবারে নেকনজরে থাকবেন। তাঁর স্ত্রী বিচারপতি সিনহার এজলাসে এখন প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি চলছে। তা নিয়ে তিনি নানা কড়া পর্যবেক্ষণ এবং নির্দেশ দিয়েছেন। তাই নাকি আইনজীবী প্রতাপচন্দ্রের সঙ্গে এমনটা হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর।