দেনাপাওনা নিয়ে বিবাদের জেরে তৈরি হয়েছিল ব্যক্তিগত আক্রোশ। তার জেরেই বাগুইআটির ২ কিশোরকে খুন করেছে সত্যেন্দ্র চৌধুরি। ধৃতকে জেরার পর এমনই দাবি করেছেন সিআইডির গোয়েন্দারা। তবে ঘটনার নানা পর্বে এখনও কিছু ফাঁক রয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা। সেই সব তথ্য বার করতে শুক্রবার সত্যেন্দ্রকে ১৪ দিনের জন্য হেফাজতে নিয়েছেন গোয়েন্দারা।
সিআইডি সূত্রে দাবি, মাসখানেক আগে মোটরসাইকেল কেনার জন্য সত্যেন্দ্রকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিল অতনু। ২ লক্ষ টাকার মধ্যে ভালো মোটরসাইকেল হয়ে যাবে বলে জানিয়েছিল সে। কিন্তু তার পর থেকে নানা কথায় অতনুকে ঘোরাচ্ছিল সত্যেন্দ্র। এমনকী টাকা ফেরত চাইলেও দিচ্ছিল না সে। সত্যেন্দ্রর দাবি, টাকা ফেরত না দেওয়ায় তাঁর স্ত্রীকে উদ্দেশ করে কুকথা বলে অতনু। এর জেরেই কিশোরের ওপর আক্রোশ তৈরি হয় তার। এর পরই অতনুকে খুনের পরিকল্পনা করতে থাকে সে।
শহরে দুর্ঘটনায় রাশ টানতে চালক এবং কনডাক্টরদের প্রশিক্ষণ দেবে ট্রাফিক পুলিশ
জেরায় ধৃত জানিয়েছে, অতনুকে খুন করতে ৪ জন দুষ্কৃতীকে ভাড়া করে নিউ টাউনের একটি হোটেলে ৪ দিন ধরে রেখে দিয়েছিল সত্যেন্দ্র। ২২ অগাস্ট দুপুরে মোটরসাইকেল কিনে দেওয়ার নাম করে অতনুকে ডাকে সে। অতনু পিসতুতো ভাই অভিষেককে সঙ্গে করে নিয়ে পৌঁছয় দেখা করতে। আগে থেকেই গোটা পরিকল্পনা সাজিয়ে ২টি গাড়ি ভাড়া করে রেখেছিল সত্যেন্দ্র। তার মধ্যে একটি গাড়ি চালাচ্ছিল সে নিজে। সেই গাড়িতে অতনু, অভিষেক ও এই ঘটনায় প্রথম গ্রেফতার হওয়া অভিজিৎ বসুকে তোলে সে। অন্যটিতে ছিল আরও ৩ জন।
অতনুকে নিয়ে ২২ অগাস্ট সন্ধ্যায় রাজারহাটে মোটরসাইকেলের একটি শো রুমে যায় অতনু। কিন্তু সেখানে অতনুর মোটরসাইকেল পছন্দ হয়নি। এর পর অতনু ও অভিষেককে নিয়ে বাসন্তী এক্সপ্রেসওয়ের দিকে চলে যায় সে। রাস্তার ফাঁকা একটি জায়গায় দাঁড়িয়ে বসে, পিছনের গাড়ি খারাপ হয়ে গিয়েছে। ওদেরও এই গাড়িতে তুলতে হবে। এর পর অতনুদের গাড়িতে যাত্রীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৭ জন। আগে থেকেই গাড়িতে রাখা ছিল দড়ি। রাত ৯টা নাগাদ সেই দড়ি দিয়েই অতনু আর অভিষেককে খুন করে তারা। এর পর ২ জনের দেহ ভেড়িতে ফেলে দিয়ে ভোরের দিকে রুবির কাছে রেখে দেয় খুনে ব্যবহৃত গাড়িটি। অন্য গাড়িতে চড়ে তারা ৫ জন পালায়। জেরায় সত্যেন্দ্র জানিয়েছে, অভিষেককে খুনের কোনও পরিকল্পনা ছিল না তার। শুধুমাত্র তথ্য প্রমাণ লোপাট করতে অভিষেককে খুন করতে হয়েছে তাকে।