অনেকেরই স্বপ্নের একটা বাড়ি করার ইচ্ছা থাকে। বলা ভালো সুখী গৃহকোণ। কারোর সেই স্বপ্ন পূরণ হয়, কারোর আবার হয় না। তবে উত্তর ২৪ পরগনার হেলেঞ্চার কৃষক মিন্টু রায়ের তেমনই একটি স্বপ্ন রয়েছে। তবে তাঁর স্বপ্নের যে বাড়ি হবে সেটি হবে জাহাজের আদলে। আর সেই স্বপ্ন পূরণে তিনি একেবারে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন।
প্রায় ১৩ বছর ধরে তিনি তিলতিল করে বাড়ি তৈরির কাজ করে যাচ্ছেন। এখনও সেই কাজ চলছে। তবে তাঁর আশা ২০২৪ সালের মধ্যে তিনি এই কাজ অনেকটাই করে ফেলতে পারবেন। আসলে শিলিগুড়ির ফাঁসিদেওয়া এলাকার বাসিন্দা তিনি। পরে তিনি কলকাতায় বাবাকে নিয়ে চলে আসেন। সেটাও প্রায় ২০-২৫ বছর আগের ঘটনা।
এদিকে কলকাতার কাছাকাছি আসার পরে তাঁর বার বার মনে হতে থাকে একটা বাড়ি বানাতে হবে। আর সেটা হবে জাহাজ বাড়ি। তিনি অনেক ইঞ্জিনিয়ারের কাছে গিয়েছেন। কিন্তু কেউ তাঁকে স্বপ্নের বাড়ির ডিজাইন তৈরি করে দিতে পারেননি। এরপর তিনি নিজের ইচ্ছা পূরণের জন্য় নিজেই নেমে পড়েন।
এরপর ২০১০ সালে তিনি প্রথম সেই ভালোবাসার বাড়ি তৈরি করা শুরু করেন। কিন্তু সেটা করতে তাঁর অনেক বছর কেটে গিয়েছে। মাঝে টাকা পয়সার সমস্যার জন্য তিনি কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছিলেন না। পরে সেই কাজ ফের শুরু করেন। এদিকে একটা সময় তিনি বুঝতে পারেন রাজমিস্ত্রির খরচ জোগাড় করা তার পক্ষে সম্ভব হবে না। এরপর তিনি নেপালে চলে যান। সেখানে তিনি রাজমিস্ত্রির কাজ শিখতে শুরু করেন। এরপর সেখান থেকে ফিরে এসে নিজেই বাড়ি তৈরিতে হাত দেন।
মিন্টু একটি সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন এখনও পর্যন্ত ১৫ লাখ টাকা খরচ করেছি। ৩৯ ফুট লম্বা ও ১৩ ফুট চওড়া বাড়ি হচ্ছে। ৯.৫ ডেসিম্যাল জমির উপর তৈরি হচ্ছে এই বাড়ি। প্রায় ৩০ ফুট উঁচু হবে এটি। এখন বাড়ি দেখতেই লোকজন এলাকায় আসছেন। তিনি জানিয়েছেন, সামনের বছরের মধ্যে বাড়ির কাজ শেষ করতে চাইছি। একেবারে উপরের তলায় একটা রেস্তরাঁ বানাব। যাতে আগামী দিনে বাড়ি থেকে কিছু আয় করতে পারি। তিনি জানিয়েছেন, মায়ের নামেই বাড়ির নাম দেব।
স্বপ্নের বাড়ির রূপ দিতে বদ্ধপরিকর মিন্টু। ধীরে ধীরে রূপ পাচ্ছে সেই স্বপ্ন।