অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে বন্ধু হারানোর শোক পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থী দলগুলির নেতাদের মধ্যে। সক্রিয় রাজনীতির ধারকাছ না মাড়ালেও অভিনেতাকে মাঝেমাঝেই দেখা যেত বাম মনোভাবাপন্নদের অরাজনৈতিক মঞ্চে। সিঙুর – নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় যখন একে একে পক্ষ বদল করেছেন বুদ্ধিজীবীরা, তখন অবিচল হয়ে তৎকালীন শাসকদলের পাশেই ছিলেন সৌমিত্রবাবু। রাজ্যে তৃণমূল সরকার প্রতিষ্ঠার পরও বদল হয়নি তাঁর রাজনৈতিক অবস্থানে।
বাম নেতাদের সঙ্গে সৌমিত্রবাবুর ঘনিষ্ঠতা সর্বজনবিদিত। সিঙুর – নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময়ও অবস্থান বদলাননি তিনি। বরং তৎকালীন সরকারের পাশেই ছিলেন তিনি। সরকার বদলের পরও সুবিধাভোগী বুদ্ধিজীবীদের তালিকায় নাম লেখাননি অভিনেতা। ‘পরিবর্তন চাই’ ব্যানারে কোনও দিন মুখ দেখা যায়নি তাঁর। তবে কখনো সোচ্চারে বিরোধিতা করেননি তৃণমূলের। সোচ্চারে জানিয়েছেন বামপন্থার প্রতি তাঁর আস্থা। বলেছেন, বামপন্থাই ভবিষ্যৎ। বামেদের অরাজনৈতিক মঞ্চে বারবার উপস্থিত থেকে বুঝিয়ে দিয়েছেন নিজের রাজনৈতিক অবস্থান।
২০১৭ সালে তাঁকে বঙ্গবিভূষণ পুরস্কার দেয় তৃণমূল সরকার। রাজ্যের নির্বাচিত সরকারের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সেই পুরস্কার গ্রহণ করেছিলেন তিনি।
সম্প্রতি CAA ও NRC বিরোধী আন্দোলনকেও সমর্থন জানিয়েছিলেন সৌমিত্রবাবু। ছিলেন পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে বামেদের আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানেও।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। শোক প্রকাশ করেছেন রাজ্যসভার সাংসদ তথা বর্ষীয়ান আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘বামপন্থার প্রতি তাঁর গভীর আগ্রহ ছিল। অনেকবার আমাদের সঙ্গে রাস্তায় নেমেছেন। বড় মাপের অভিনেতা হলেও খুব সাধারণ জীবনযাপন করতেন। একাধিক আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। আমাদের খুব ক্ষতি হয়ে গেল।’