একেবারে জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল শরীরে। ব্যাথা সেভাবে নেই অথচ শরীরে এক অদ্ভূত অস্বস্তি। গোটা অণ্ডকোষটাই কার্যত নেমে এসেছিল হাঁটুতে। যে অণ্ডকোষের আকার সাধারণত ২ ইঞ্চির মধ্যে হয় তা বাড়তে বাড়তে প্রায় ১৫ ইঞ্চির কাছাকাছি এসে গিয়েছিল। আর তার সঙ্গেই বৃহদন্ত্র, ক্ষুদ্রান্ত্র সমেত প্রায় সমস্ত পাকযন্ত্রই পেট থেকে নেমে এসেছিল অণ্ডকোষ। একেবারে চরম অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছিলেন শিয়ালদহের বাসিন্দা রমেশ সাহানি।
চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে দেখেন দীর্ঘদিন ধরে হার্নিয়ার সমস্যায় ভুগছিলেন ওই রোগী। বয়স ৬৫ বছর। অণ্ডকোষ এভাবে নেমে আসায় তিনি আর প্যান্ট পরতে পারতেন না। লুঙ্গি পরেই লজ্জা নিবারণ করতেন। তবে এবার সেই হার্নিয়ার চিকিৎসায় সাফল্য পেলেন নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা। তবে গোটা ব্যাপারটা অত সহজ ছিল না।
এভাবে বৃহদন্ত্র, ক্ষুদ্ধান্ত্র নীচে নেমে আসায় দীর্ঘদিন ধরে তাঁর তলপেটের অংশটি প্রায় খালি হয়ে গিয়েছিল। সেই অবস্থাতেই ঘোরাফেরা করছিলেন তিনি। চিকিৎসকদের মতে, অন্ডকোষ যে থলিতে থাকে সেটিকে বলা হয় স্ক্রোটাল। রমেশ সাহানি যে অসুখে ভুগছিলেন সেটির নাম অ্যাবডোমেন স্ক্রোটাল।
হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ উৎপল দে, ডাঃ সুচেতা সরকার, ডাঃ কৃষ্ণ প্রকাশ, ডাঃ অর্চনা রায় গোটা অপারেশন প্রক্রিয়ায় অংশ নেন। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে পেট খালি থাকায় নেমে আসা অঙ্গগুলি জোর করে ঢোকানো সম্ভব ছিল না। কারণ পেটের পেশি ইতিমধ্যে সংকুচিত হয়ে গিয়েছে।
এক্ষেত্রে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে প্রথমে শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম অনুশীলন করানো হয়। কম্পোনেন্ট সেপারেশন টেকনিকের পেটের আয়তন বাড়ানো হয়। নিম্নাঙ্গের একাংশ কাটা হয়। এরপর হার্নিয়ার জায়গা ঠিকঠাক করা হয়। এরপর মাসল কেটে, টেনে পেটের মাঝামাঝি আনা হয়। সফল হয় অপারেশন।