তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবসে দলের অন্দরের নবীন–প্রবীণ দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এসেছিল। তাই নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা। তারপর সন্ধ্যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে হাজির হন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ফিরহাদ হাকিম। সুব্রত বক্সি এবং কুণাল ঘোষের মন্তব্যে শোরগোল পড়ে যায়। তবে একদিন পর সেই বিতর্কেই জল ঢাললেন কুণাল ঘোষ। এবার শোনা গেল নরম সুর। আর প্রবীণ–নবীন ঐক্যবদ্ধের কেমিস্ট্রিই বেরিয়ে এল দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের মুখ থেকে।
এদিকে শরীর–স্বাস্থ্য যতদিন ঠিক থাকবে প্রবীণরা থাকবেন। এমন একটা বার্তাও দেওয়া হয়েছে। সেদিক থেকে দেখতে গেলে সুব্রত বক্সি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। স্পন্ডিলাইটিস ও নানা শারীরিক সমস্যা আছে সুব্রত বক্সির। তাই পাঁচ বছরে পাঁচটি জেলাতে তাঁকে যেতে দেখা যায়নি। তাহলে কি সরবেন সুব্রত বক্সি রাজ্য সভাপতি পদ থেকে? এই প্রশ্ন এখন দলের অন্দরেই উঠে গিয়েছে। আর আজ, সোমবার তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘তৃণমূল এক এবং ঐক্যবদ্ধ। বিষয়ভিত্তিক মতপার্থক্য থাকে। তৃণমূল কংগ্রেসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ কথা। সুব্রত বক্সি দলের সিনিয়র নেতা। দলের সিনিয়র নেতারা ভোটে দাঁড়ালে এক হয়ে লড়াই করবে গোটা তৃণমূল কংগ্রেসই।’
অন্যদিকে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, গৌতম দেব, ফিরহাদ হাকিমরা প্রবীণের পক্ষ নিয়েই সওয়াল করেছিলেন। যা পত্রপাঠ খারিজ করে দেন কুণাল ঘোষ। আজ অবশ্য তিনি বলেন, ‘সুব্রত বক্সি, ফিরহাদ হাকিম দাঁড়াবেন। এককাট্টাভাবে ভোটে লড়বেন। সিনিয়রদের ভূমিকা থাকবে। যতক্ষণ শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ রয়েছেন ততক্ষণ একরকম ভূমিকা পালন করবেন। প্রবীণদের লড়াই, আত্মত্যাগ অভিজ্ঞতা সবটাই শেয়ার করবেন। সিনিয়র নেতাদের পুরোদস্তুর ভূমিকা আছে। পরিবারে যেমন হয়। নিশ্চিতভাবে সংগঠনে থাকবেন।’
আরও পড়ুন: খাস কলকাতার পানশালায় ধুন্ধুমার কাণ্ড, বর্ষবরণের রাতে তিন বন্ধুকে বাউন্সারদের মারধর, গ্রেফতার চার
এছাড়াও কুণাল ঘোষ দু’পক্ষকেই বার্তা দিয়েছেন। কারণ এখনও এই বিষয়ে দ্বন্দ্ব জিইয়ে রাখলে লোকসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে ক্ষতি হয়ে যাবে। তাই কুণালের কথায়, ‘এই পরিবারে শেষ কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেনাপতি হলেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। আবার সুব্রত বক্সির মতো সিনিয়র নেতারা আছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাঁচটা প্রজন্ম তৈরি করে দিয়েছেন। নবীন–প্রবীণ দ্বন্দ্বের সমস্যা সিপিএম–বিজেপিতেও রয়েছে। একটা সময় জ্যোতি বসু, সুরজিৎ দে’র বিরুদ্ধে প্রকাশ কারাটদের অবস্থান ছিল। কংগ্রেসের কতজন ওয়ার্কিং কমিটি থেকে বেরিয়ে গেলেন। তৃণমূলে এসব নেই। এই দ্বন্দ্ব বিরোধী দলগুলির ট্র্যাডিশন। আমার সবথেকে মজা লাগছে তৃণমূল কংগ্রেস নিয়ে বিরোধী দলগুলি এত ব্যস্ত দেখে। তৃণমূলে দ্বন্দ্ব নেই, গণতন্ত্র আছে।’ আর তাপস রায় বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের দলের শেষ কথা। অভিষেক নেতৃত্বে ছিল, আছে, থাকবে।’