কলকাতা পুরসভায় বর্তমান পুর বোর্ড ক্ষমতায় আসার পরেই বারবার দাবি করেছে তাদের আমলে শহরে কোনও পুকুর ভরাট হয়নি। তবে গার্ডেনরিচ কাণ্ডের পর পুকুর বুজিয়ে বহুতল তৈরির বিষয়টি সামনে এসেছে। তারপরে শহরে পুকুর ভরাট রুখতে তৎপর হল কলকাতা পুরসভা। এর জন্য নজরদারি চালাতে বরো ভিত্তিক ১০ সদস্যের কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। বরো চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে এই কমিটি কাজ করবে। সেক্ষেত্রে কমিটি পুকুর বোজানো সংক্রান্ত অভিযোগ প্রতি মাসে পর্যালোচনা করবে এবং তার ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
আরও পড়ুনঃ ইদ পেরলেই গার্ডেনরিচের অলিতে গলিতে যাবেন মেয়র, ইঞ্জিনিয়ার সুরক্ষায় বিশেষ স্কোয়াড
পুর কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, সব রকমের চেষ্টা সত্ত্বেও এক শ্রেণির প্রোমোটার পুকুর ভরাট করছে। জানা গিয়েছে, এই কমিটির আহবায়ক হবেন সংশ্লিষ্ট বরোর এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার (সিভিল)। এছাড়াও অন্যান্য বিভাগের আধিকারিকরা কমিটিতে থাকবেন। সেই সঙ্গে থাকবেন সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জ।
এর পাশাপাশি শহরের সমস্ত পুকুরের রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকমতো হচ্ছে কিনা সেগুলিও খতিয়ে দেখবে এই কমিটি। তার ভিত্তিতে মালিককে নীতি নোটিশ পাঠাবে পুরসভা। যদি মালিকের খোঁজ খবর না পাওয়া যায় অথবা মালিক রক্ষণাবেক্ষণের অসমর্থ হন সে ক্ষেত্রে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুকুরের নিয়ন্ত্রণ পুরসভা নিজের অধীনে নিয়ে নেবে। এই কমিটি কোনও অভিযোগ পরপর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদক্ষেপ করবে। সেক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সংশ্লিষ্ট এলাকার থানায় অভিযোগ দায়ের করবেন। তার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট পুরসভায় পাঠাতে হবে।
এছাড়াও শহরের পুকুর এবং জলাশয়ের তালিকা পরিবেশ এবং ঐতিহ্য দফতরের কাছে রয়েছে। তা পুরসভার বাকি সব দফতরের মধ্যে ভাগ করে নিতে বলা হয়েছে। এপ্রসঙ্গে পরিবেশবিদদের একাংশের অভিযোগ, এর আগে জলাশয় এবং পুকুর ভরাট রুখতে একাধিক নির্দেশ জারি করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে যে কোনও কাজ হয়নি তার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, পুরসভার তরফে বারবার দাবি করা হয়েছে, যে বাম পুকুর ভরাট হয়েছে। বর্তমান পুর বোর্ডের আমলে তা হয়নি। তবে গার্ডেনরিচ কাণ্ড চোখে দেখিয়ে দিয়েছে যে বর্তমান পুর বোর্ডের সময়ও পুকুর ভরাট হয়েছে। এমন অবস্থায় পুরসভার এই নির্দেশ বিরোধীদের অভিযোগকে মান্যতা দিচ্ছে বলেই তারা মনে করছেন।