শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি সঙ্গে সমবেত কণ্ঠে ‘জয় শ্রীরাম’। এভাবেই বিজেপি–র কর্মী–সমর্থকরা পশ্চিমবঙ্গে স্বাগত জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ–কে। বুধবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ পৌঁছনোর কথা ছিল তাঁর। কিন্তু কিছুটা দেরিতে রাত ৯টা বেজে ৫ মিনিট নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরে নামে অমিত শাহর বিমান। কয়েকঘণ্টা আগে থেকে ঢাক–ঢোল, করতাল নিয়ে তাঁর জন্য অপেক্ষা করছিলেন গেরুয়া শিবিরের সমর্থক, কীর্তনশিল্পীরা। তিনি বিমানবন্দর থেকে বেরোতেই সমস্বরে সে সব বেজে উঠে এক অন্য উদ্দীপনা সৃষ্টি করে এদিন।
সেই উদ্দীপনার সঙ্গে তাল মিলিয়েই এদিন বিমানবন্দরে নেমে বেশ কিছুটা পথ হেঁটে যান বিজেপি–র প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। তাঁকে রাজ্যে স্বাগত জানান দিলীপ ঘোষ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায়, অনুপম হাজরারা। পুষ্পবৃষ্টি করে অভ্যর্থনা জানানো হয় দলের তরফ থেকে। পাল্টা হাত নেড়ে অভিবাদন জানান তিনি। একইসঙ্গে হাত দিয়ে ইশারা করে নিজেই শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে নির্দেশ দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
বিমানবন্দর থেকে সরাসরি তিনি যান রাজারহাটের ইকোপার্কের বিপরীতে বিলাসবহুল হোটেল ‘ওয়েস্টইন’–এ। ৫ ও ৬ নভেম্বর— এই ২ দিনের রাজ্য সফরে ঠাসা কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। বৃহস্পতিবার কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বিএসএফ–এর হেলিকপ্টারে তিনি যাবেন বাঁকুড়ায়। সকাল ১১টা নাগাদ বাঁকুড়ার পুয়াবাগানে ‘ভগবান’ বিরসা মুন্ডার মূর্তিতে মাল্যদান করে স্বাধীনতা সংগ্রামীকে শ্রদ্ধা জানাবেন তিনি। এর পর সাড়ে ১১টার সময় বাঁকুড়া রবীন্দ্রভবনে দলীয় নেতামন্ত্রীদের সঙ্গে সারবেন সাংগঠনিক বৈঠক।
বৈঠক সেরে তিনি যাবেন চতুরডিহি গ্রামের বাসিন্দা আদিবাসী বিভীষণ হাঁসদার বাড়িতে। সেখানে সারবেন মধ্যাহ্নভোজ। জানা গিয়েছে, তাঁর মেনুতে থাকবে ভাত, ডাল, আলুভাজা, আলুপোস্ত, পোস্তর বড়া, চাটনি, পাপড়, মিষ্টি। সেখান থেকে ফের রবীন্দ্রভবনে ফিরে দুপুর ৩টে নাগাদ বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধির সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করবেন তিনি।
শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে গিয়ে পুজো দেওয়ার কথা রয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। সেখান থেকে ১১টা নাগাদ যাবেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর বাড়িতে। সেখানে তাঁর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতা সারবেন। এর পর দুপুর ১টা নাগাদ তিনি যাবেন বিধাননগরের EZCC-তে। সেখানে কলকাতা ও লাগোয়া জেলাগুলির দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করবেন শাহ।
এর পর নিউটাউনের আদর্শপল্লীর বাসিন্দা বিজেপি কর্মী মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি নবীন বিশ্বাসের বাড়িতে সারবেন মধ্যাহ্নভোজ। সেখানে মেনুতে থাকছে রুটি, ছোলার ডাল, পনির, ভাত, শুক্তো, মুগডাল, চাটনি ও পায়েস। বিকেলে সমাজে বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষদের সঙ্গে সাক্ষাতের পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। শুক্রবার রাতে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেবেন অমিত শাহ।