দুর্গাপপুজো শুরু হওয়ার পর থেকেই কলকাতা বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় সবজি থেকে শুরু করে ফল, মাছের জোগানে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তার ফলে এই সমস্ত সামগ্রীর দামও বেড়েছে। মূলত পুজোর সময় প্রতি বছরের মতো এবারও শহরে ট্রাক প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। সেই কারণে বাজারে সবজি, ফল, মাছের পর্যাপ্ত জোগানে ঘাটতি দেখা দিয়েছিল। তবে সোমবার থেকে শহরে ট্রাক প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা কমেছে। এই অবস্থায় আগামী দিনে সবজি, ফল বা মাছের দাম কমবে বলেই মনে করছেন সবজি ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন: টাস্ক ফোর্স তো সোমবার থেকে মাঠে নামবে, শাক-সবজির দাম কমবে কি?
পাইকারি এবং খুচরো সবজি বিক্রেতারা এই সমস্ত সামগ্রীর দাম বৃদ্ধির জন্য দুটি কারণকে দায়ী করেছেন। তারা জানান, পুজোয় ৫ দিন শহরে পণ্যবাহী যানবাহন প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকার ফলে সবজি, ফল, মাছ সরবরাহে সঙ্কট তৈরি হয়েছিল। এছাড়াও, অক্টোবরের শুরুতে ভারী বৃষ্টি এবং তারপর ডিভিসি থেকে জল ছাড়ার ফলে বহু চাষের জমি প্লাবিত হয়েছিল। তাতে বহু ফসল নষ্ট হয়েছিল। এই সমস্ত কারণে ওইসব সামগ্রীর দাম বেড়েছে। এক ব্যবসায়ী জানান, দুর্গাপুজোর সময় এমনিতেই শাকসবজি, মাছ ও ফলের চাহিদা বেড়ে যায়।খারাপ আবহাওয়ার কারণে এবার পুজোর আগে সবজি, ফলের সরবরাহ কম ছিল। ট্রাকের উপর নিষেধাজ্ঞার পর সরবরাহ আরও কমে যায়। তবে পুজো শেষ হয়ে যাওয়ার পর চাহিদা কিছুটা কমেছে ঠিকই, কিন্তু, এখনও চাহিদা ও সরবরাহের বিস্তর ফারাক রয়েছে। যতদিন না পর্যন্ত এই ঘাটতি পূরণ হয় ততদিন পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা নেই।
বর্তমানে কলকাতার বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ১০০ টাকা, কাঁচা লঙ্কা ১৫০ টাকাতে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পিস ফুলকপি ৮০-৯০ টাকা এবং বাঁধাকপি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। উচ্ছের প্রতি কেজির দাম ৮০ টাকা। প্রায় সমস্ত সবজির গড় দাম আগের সপ্তাহের তুলনায় প্রতি কেজিতে কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। শুধু টমেটোর দাম কিছুটা কমেছে। ফলের বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। লক্ষ্মী পুজোয় বাজারদর আরও কিছুটা বেড়েছে। আপেল, মুসম্বি, কমলালেবুর মতো ফলের দাম বেড়েছে।
তবে টাস্কফোর্সের সদস্য কমল দে জানান, লক্ষ্মী পুজোর পরে দামে কিছুটা স্বস্তি দেখা যাবে। উৎপাদন ভালো থাকলে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে শীতকালীন শাক-সবজি বাজারে ঢুকলেই দাম কমে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। অন্যদিকে, বাজারে সামুদ্রিক মাছের অভাব দেখা দিয়েছে। পমফ্রেট, রুই, কাতলার মতো জনপ্রিয় মাছের দাম উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে।