বউবাজারে মেট্রোর কাজ চলছে শেষ ধাপে। তবে সেখানে কাজের সময় অতীতে যেভাবে বিপত্তি ঘটেছে, তার আর পুনরাবৃত্তি চাইছে না মেট্রো কর্তৃপক্ষ। তাই কোনওরকম ঝুঁকি না নিয়ে এবার শেষধাপের কাজ সম্পন্ন করতে বিশেষ পরিকল্পনা নিল মেট্রো কর্তৃপক্ষ। এর জন্য লিক্যুইড নাইট্রোজেন ব্যবহার করা হবে। যে অংশে কাজ করা হবে সেখানে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে তরল নাইট্রোজেন। যার ফলে কম তাপমাত্রায় জল জমে গিয়ে সেখানে কাজ করতে পারবেন মেট্রোর কর্মীরা।
আরও পড়ুন: Kolkata Metro: বউবাজার পেরিয়ে গেল মেট্রোর রেক, গঙ্গার নীচে দিয়ে কবে?
সাধারণত তরল নাইট্রোজেনের তাপমাত্রা মাইনাস ১৯৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শূন্য ডিগ্রি বা তার নিচে তাপমাত্রা নেমে গেলেই জল জমে যায়। ফলে মাইনাস ১৯৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় জল জমে গেলে ধ্বস নামার মতো বিপত্তি দেখা দেবে না বলেই মনে করছে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। মেট্রো রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় নরওয়েতে। এবার সেই প্রযুক্তি কলকাতা মেট্রোর ক্ষেত্রে কতটা কার্যকর হবে তাই নিয়ে অধীর আগ্রহে রয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। জানা গিয়েছে, এই প্রযুক্তির নাম হল ‘গ্রাউন্ড ফ্রস্ট’।
এই তরল নাইট্রোজেন কীভাবে ভূগর্ভে প্রবেশ করানো হবে? ইতিমধ্যে তা নিয়ে পরিকল্পনা করা হয়েছে। মেট্রো সূত্রে জানা গিয়েছে, এর জন্য বউ বাজার থেকে নির্মল চন্দ্র স্ট্রিট পর্যন্ত বেশ কয়েকটি গর্ত করে তার সাহায্যে তরল নাইট্রোজেন ভূগর্ভে পাঠানো হবে। এক -একটি গর্ত করা হবে ছয় মিটার ব্যাসের। ১৬ মিটার পর্যন্ত লম্বা এই গর্ত করা হবে। এরপর ৮ থেকে ১০ টি পাইপের মাধ্যমে লিক্যুইড নাইট্রোজেন ভূগর্ভে পাঠানো হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এর ফলে পাইপ সংলগ্ন এক মিটার জায়গায় জল জমে বরফে পরিণত হবে। স্বাভাবিকভাবেই এই কাজের জন্য বিপুল পরিমাণে নাইট্রোজেন প্রয়োজন। কোথা থেকে এই তরল নাইট্রোজেন পাওয়া যাবে? ইতিমধ্যে তা ঠিক করেছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। জানা গিয়েছে, জামশেদপুর থেকে আনা হবে এই তরল নাইট্রোজেন।
প্রসঙ্গত, মেট্রোপথে গঙ্গার নিচে দিয়ে হাওড়া সঙ্গে জুড়েছে এসপ্ল্যানেড। শিয়ালদার সঙ্গে সেক্টর ফাইভও জুড়েছে। তবে শিয়ালদা থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত মেট্রো এখনই চালু করা যাচ্ছে না। এর কারণ বৌবাজারে বিপর্যয়। বারবার বিপর্যয়ের ফলে মেট্রোর কাজ ব্যাহত হয়েছে। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বৌবাজারের বাসিন্দারা। অনেকেই ঘর ছাড়তে হয়েছে। জানা গিয়েছে, চলতি মাসের মধ্যেই এই কাজ শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। সবমিলিয়ে কাজ শেষ হতে চার মাস সময় লাগবে বলে মনে করছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে, এই কাজ হলে যান চলাচলে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।