বাংলা তথা গোটা দেশ তাঁকে ‘দিদি’ বলেই ডাকে। যদিও তিনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিও ভাইফোঁটা দিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির ভাইফোঁটা বরাবরই খুব তাৎপর্যপূর্ণ হয়। নিজের ভাইদের পাশাপাশি রাজ্যের মন্ত্রী–বিধায়কদেরও ফোঁটা দেন মুখ্যমন্ত্রী। এটা কালীঘাটের বাসভবনে প্রত্যেক বছরেরই রীতি। বড় করে ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার অনুষ্ঠান হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা আর না থাকার উপর রাজনৈতিক সমীকরণ বোঝা যায়। এবারেও নেতা–মন্ত্রী–বিধায়কদের অনেকেই ফোঁটা পেয়েছেন দিদির কাছ থেকে।
২০২৩ সালের ভাইফোঁটায় মুখ্যমন্ত্রীর থেকে ফোঁটা নেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এদিন ভাইফোঁটা নিতে আসেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, জাভেদ খান, রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং শান্তনু সেন। একইসঙ্গে দিদির আশীর্বাদ পেয়েছেন লোকসভার সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সমীর চক্রবর্তী এবং উলুবেড়িয়া উত্তরের বিধায়ক নির্মল মাজি। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে আসেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকেও ফোঁটা দেন মুখ্যমন্ত্রী।
২০২২ সালে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ভাইফোঁটায় এসেছিলেন মুকুল রায়। এখন তিনি অসুস্থ হয়ে বাড়িতে আছেন। এবার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি থেকে কপালে চন্দনের ফোঁটা নিয়ে আবেগে ভাসলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। এটাই এবারের ভাইফোঁটার চমক। সক্রিয় রাজনীতিতে ফেরার বিষয়টি এড়িয়ে বুঝিয়ে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে তাঁকে আলাদা করা যাবে না। ফোঁটা নিয়ে বেরিয়ে শোভন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ ভীষণ আবেগের একটা দিন। মমতাদির প্রতি শ্রদ্ধার দিন। মমতাদির মনে আমার প্রতি যে ভালবাসা রয়েছে, তার কোনও বিকল্প হয় না। এটা উপলব্ধি করি।’
আরও পড়ুন: ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, মুসলিম ভাইদের ভাইফোঁটা দিয়ে সম্প্রীতির বার্তা হিন্দু দিদিদের
অন্যদিকে নাম না বিরোধীদের উদ্দেশেও বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রীর স্নেহের ‘কানন’। এখন রাজ্যে একের পর এক নেতা–মন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। শোভনের কথায়, ‘শুধুমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে, নিজস্ব স্বার্থসিদ্ধির জন্য কেউ কেউ পরিকল্পিতভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আঘাত করছেন। মমতাদির বিরুদ্ধে চক্রান্ত হলে, আমার মতো বাংলার বহু মানুষ নিজেদের কলিজা দিয়ে সবকিছুকে রক্ষা করবে। পরিকল্পিতভাবে যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে দুর্বল করার চেষ্টা হয়, তাহলে বাংলার ক্ষতি হবে। কেউ সেই ক্ষতি পূরণ করতে পারবে না। মমতাদি পশ্চিমবঙ্গের উপর বটবৃক্ষের মতো ছায়া দিয়ে রেখেছেন। তার জন্য আমি সবসময় তৈরি ছিলাম, এখনও আছি। মমতাদি যখন সঙ্গে থাকেন, তখন বাকি কিছুর দরকার হয় না।’