ছয় বছরের শিশুকে ঘুমন্ত অবস্থায় পর পর ছুরির কোপে রক্তাক্ত করে খুনের ঘটনা ঘটেছে ফালাকাটার কুটিরপার এলাকায়। শুধু নিজের শিশুকন্যাকেই খুন করেন থামেননি, তার সঙ্গে নিজেকেও শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা করেন ওই মহিলা। এমনই অভিযোগ দায়ের হয়েছে পুলিশে। আচমকা এমন কী ঘটেছে যার জেরে এভাবে শিশুকন্যাকে খুন করা হল? তার উত্তর খুঁজতে গিয়ে বারবার উঠে আসছে অভিযুক্ত মহিলার অবসাদ ঘিরে নানান প্রসঙ্গ।
আর চারপাঁচটা দিনের মতোই ভোরের কাজকর্মের পর্ব শুরু হয়েছিল বাড়িতে। রোজের মতো কাজকর্ম শুরু করেন পরিবারের বাকি লোকজন। তবে, ছন্দপতন হয়, শিশুকন্যার প্রচণ্ড কান্নার শব্দে। কার্যত আর্তনাদ করে ওঠে ছয় বছরের ছোট্ট শিশু। পরিবারের সকলে ঘর খুলে দেখেন, ততক্ষণে যা হওয়ার তা ঘটে গিয়েছে। রক্তস্নাত হয়ে নিস্তেজ অবস্থায় রয়েছে শিশু। ছোট্ট শরীর জুড়ে পর পর ছুরির কোপের দাগ। এদিকে, অভিযুক্ত মহিলাও ততক্ষণে নিজেকে ওই ছুরি দিয়ে বার কয়েক আঘাত করেছে। অভিযোগ সে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। তড়িঘড়ি তাদের দুজনকেই হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবারের লোকজন। হাসপাতালে শিশুকে নিয়ে যেতেই তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এদিকে, শিশুর মা সান্ত্বনা রায়ের এমন কাণ্ডে ততক্ষণে হতবাক এলাকাবাসী। উল্লেখ্য, ২৬ বছরের সান্ত্বনা নিজের একমাত্র শিশুকন্যাকে নিয়ে বাবার বাড়িতে থাকতেন। সেখানেই এমন চরম কাণ্ডটি ঘটে যায়। ফালাকাটার গুয়াবরনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা তপন রায়ের সঙ্গে আট বছর আগে বিয়ে হয় সান্ত্বনার। এরপর কেরলে চাকরি সূত্রে চলে যান তপন রায়। এদিকে সন্তানকে নিয়ে এসে বাবার কাছে থাকতে শুরু করেন ওই সান্ত্বনা।
অভিযোগ, স্বামী তপন রায় বহুদিন ধরে স্ত্রী ও মেয়ের খোঁজ নিতেন না। দিনের পর দিন স্বামীকে ফোন করে গেলেও তিনি ফোন ধরতেন না। এর জেরেই ধীরে ধীরে অবসাদের দিকে সান্ত্বনা চলে যান বলে মনে করা হচ্ছে প্রাথমিকভাবে। যার জেরেই নিজের সন্তানকে তিনি হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ। সান্ত্বনার পরিবারের দাবি, তাঁর স্বামীকে একবার আনা হলেও, তিনি স্ত্রীর চিকিৎসা করাননি। অবসাদের জেরে একবার স্বামীকেও সান্ত্বনা আঘাত করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আপাতত বীরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন আহত সান্ত্বনা।