ইতিহাস বদলাতে পারল না পাকিস্তান। এখনও পর্যন্ত এশিয়া কাপের ফাইনালে কখনও সম্মুখসমরে নামেনি ভারত-পাকিস্তান। সেই ধারা বজায় রইল এবারও। ভারত আগেই চলতি এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠেছে। শ্রীলঙ্কার কাছে ভার্চুয়াল সেমিফাইনালে হেরে ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হলেন বাবর আজমরা। অন্যতম ফেভারিট হিসেবে টুর্নামেন্ট শুরু করেও সুপার ফোর রাউন্ড থেকে বিদায় নিতে হল পাকিস্তানকে।
অন্যদিকে শ্রীলঙ্কা ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করল বলা যায়। কেননা এখনও পর্যন্ত সব থেকে বেশিবার এশিয়া কাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছে ভারত-শ্রীলঙ্কা। পাকিস্তানকে হারিয়ে এবারও খেতাবি লড়াইয়ে ভারতের বিরুদ্ধে মাঠে নামার ছাড়পত্র পেয়ে যায় দ্বীপরাষ্ট্র।
বৃহস্পতিবার কলম্বোয় বৃষ্টির জন্য ম্যাচ শুরু হয় নির্ধারিত সময়ের অনেক দেরিতে। বিস্তর সময় নষ্ট হওয়ায় প্রাথমিকভাবে ৪৫ ওভার প্রতি ইনিংসের খেলা হবে বলে জানিয়ে দেন ম্যাচ অফিসিয়ালরা। ছোট হয়ে যাওয়া ম্যাচে টস জিতে শুরুতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন পাক দলনায়ক বাবর আজম। যদিও শুরুতেই ওপেনার ফখর জামানের উইকেট হারিয়ে বসে পাকিস্তান।
প্রথম ইনিংসের ২৭.৪ ওভার খেলা হওয়ার পরে পুনরায় বৃষ্টিতে থমকে যায় ম্যাচ। পাকিস্তানের স্কোর ছিল তখন ৫ উইকেটে ১৩০ রান। আরও কিছুটা সময় নষ্ট হওয়ায় ওভার কাটা যায় আরও। ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমে দাঁড়ায় ৪২ ওভার প্রতি ইনিংসের।
আবদুল্লা শফিক ও মহম্মদ রিজওয়ানের জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে ভর করে পাকিস্তান নির্ধারিত ৪২ ওভারে ৭ উইকেটের বিনিময়ে ২৫২ রানের বড়সড় ইনিংস গড়ে তোলে। শফিক ওপেন করতে নেমে ওয়ান ডে কেরিয়ারের প্রথম অর্ধশতরান করেন। তিনি ৩টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ৬৯ বলে ৫২ রান করে আউট হন।
রিজওয়ান ৬টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ৭৩ বলে ৮৬ রান করে অপরাজিত থাকেন। ৪টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ৪০ বলে ৪৭ রানের আগ্রাসী ইনিংস খেলে মাঠ ছাড়েন ইফতিকার আহমেদ। বাবর আজম ৩টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৩৫ বলে ২৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন। এছাড়া ফখর ৪, মহম্মদ হ্যারিস ৩, মহম্মদ নওয়াজ ১২, শাদব খান ৩ ও শাহিন আফ্রিদি ১ রানের যোগদান রাখেন।
শ্রীলঙ্কার হয়ে ৬৫ রানের বিনিময়ে ৩টি উইকেট নেন মাথিসা পথিরানা। ৫৮ রানে ২টি উইকেট নেন প্রমোদ মদুশান। ১টি করে উইকেট দখল করেন মাহিশ থিকশানা ও দুনিথ ওয়েলালাগে।
ডাকওয়ার্থ-লুইস নিয়মে জয়ের জন্য শ্রীলঙ্কার সামনে পরিবর্তিত লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ২৫২ রানের। অর্থাৎ, পাকিস্তান যত রান তোলে, ম্যাচ জিততে ঠিক তত রানই তুলতে হতো দ্বীপরাষ্ট্রকে। শেষমেশ ম্যাচের একেবারে শেষ বলে জয় তুলে নেয় শ্রীলঙ্কা। ৪২ ওভারে ৮ উইকেটের বিনিময়ে ২৫২ রান তুলে ম্যাচ জিতে যায় শ্রীলঙ্কা। ডাকওয়ার্থ-লুইস নিয়মে ২ উইকেটে ম্যাচ জিতে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেন দাসুন শানাকারা।
শ্রীলঙ্কার হয়ে ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠেন কুশল মন্ডিস। যদিও নিশ্চিত শতরান হাতছাড়া করেন তিনি। ৮টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ৮৭ বলে ৯১ রান করে মাঠ ছাড়েন মেন্ডিস। নিশ্চিত হাফ-সেঞ্চুরি মাঠে ফেলে আসেন সাদিরা সমরাবিক্রমে। তিনি ৪টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৫১ বলে ৪৮ রান করে আউট হন।
জয়ের জন্য শেষ ২ বলে ৬ রান দরকার ছিল শ্রীলঙ্কার। জামান খানের বলে ১টি চার ও ১টি ২ রান নিয়ে শ্রীলঙ্কার জয় নিশ্চিত করেন চরিথ আসালঙ্কা। তিনি ৩টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ৪৭ বলে ৪৯ রান করে অপরাজিত থাকেন।
এছাড়া পাথুম নিশঙ্কা ২৯, কুশল পেরেরা ১৭, দাসুন শানাকা ২ ও প্রমোদ মদুশান ১ রানের যোগদান রাখেন। খাতা খুলতে পারেননি দুনিথ ওয়েলালাগে। পাকিস্তানের হয়ে ৫০ রানে ৩টি উইকেট নেন ইফতিকার আহমেদ। ৫২ রানে ২টি উইকেট নেন শাহিন আফ্রিদি। ৫৫ রান খরচ করে ১টি উইকেট নেন শাদব খান। ম্যাচের সেরা হন কুশল মেন্ডিস।