বাংলাদেশের জন্য এশিয়া কাপটা একদমই ভালো যায়নি। শ্রীলঙ্কার কাছে হারের হতাশা দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল শাকিব আল হাসানরা। এরপর আফগানিস্তানকে হারিয়ে সুপার ফোরে জায়গা করে নিয়ে ছিল। তবে এরপরেও ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে আগেই ছিটকে গিয়েছিল তারা। তবে টুর্নামেন্টের শেষ ম্যাচে টিম ইন্ডিয়াকে হারিয়ে বিশ্বকাপের আগে কিছুটা আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছে বাংলাদেশ। রোহিতদের হারানোর পরে আসন্ন বিশ্বকাপে ভালো কিছু করার স্বপ্ন দেখছে শাকিব অ্যান্ড কোম্পানি।
আসলে গোটা এশিয়া কাপ জুড়েই বাংলাদেশ দলে ছিল চোট ও অসুস্থতা। শুরুতে দলের সঙ্গে আসতে পারেননি লিটন দাস, পরে তিনি দলে যোগ দিতেই হ্যামস্ট্রিংয়ে চোটে পেয়ে দেশে ফিরে যান নাজমুল হোসেন শান্ত। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে ছিটকে যান দলের গুরুত্বপূর্ণ পেসার এবাদত হোসেন। মুশফিকুর রহিম দেশে ফিরে আসেন ব্যাক্তিগত কারণে। চলতি এশিয়া কাপে কখনই পুরো শক্তির দল পাননি শাকিব আল হাসান। এমন অবস্থায় টিম ইন্ডিয়াকে হারিয়ে সেই কথাটাই মনে করিয়ে দিলেন তিনি। আসলে এশিয়া কাপের শেষ ম্যাচে ভারতকে হারানোর স্বস্তি পেয়েছে বাংলাদেশ। নিয়মরক্ষার ম্যাচে ৬ রানে জিতেছে তারা। এ ম্যাচের পর আসন্ন বিশ্বকাপ ঘিরে আসার কথাই শুনিয়েছেন শাকিব।
বাংলাদেশের ওয়ানডে দলের অধিনায়ক শাকিব আল হাসান পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসে বলেন, ‘আমার মনে হয় আমাদের খুব ভালো দল আছে। তবে এই দলের অনেকের ইনজুরি ছিল। এশিয়া কাপে প্লেয়ারদের আসা-যাওয়া আমাদের অসুবিধা করেছে। আশা করি আমরা বিশ্বকাপে পুরো ফিট দল পাবো। যদি সেটা হয় তাহলে আমরা ভয়ঙ্কর দল হয়ে উঠব।’ ভারতের বিরুদ্ধে দারুণ পারফরম্যান্স করে ম্যাচ সেরার পুরস্কারও জিতেছেন শাকিব আল হাসান। এই ম্যাচে ব্যাট হাতে ৮৫ বলে ৮০ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। পরে বল হাতে ১০ ওভারে ৪৩ রান দিয়ে নেন একটি উইকেট। ম্যাচের পর অবশ্য এই জয়ের জন্য সতীর্থদের কৃতিত্ব দিয়েছেন শাকিব।
বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘যেসব ছেলেরা সুযোগ পায়নি, আমরা তাদের সুযোগ দিয়েছি। আমরা দেখতে চেয়েছিলাম কোন কম্বিনেশনটা ঠিক হয়, শেষ কয়েকটা ম্যাচ দেখে ভেবেছি স্পিনাররা বড় অংশ হবে। এজন্য বাড়তি স্পিনার নিয়েছিলাম। সৌভাগ্যবশত সেটা কাজে এসেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যখন মাহেদি বল করছিল, তখন বিষয়টা সহজ ছিল না। ও এসে আমাদের ব্রেক থ্রু দিয়েছিল। সাধারণত অফ স্পিনার ডান হাতিদের উইকেট পায় না। ও আমাদের সেটা এনে দিয়েছিল। শেষ দিকে টানা পাঁচ ওভার করাও সহজ ছিল না। আমাদের তানজিমকেও কৃতিত্ব দিতে হবে। সে যেভাবে বল করেছে, দুটা উইকেট এনে দিয়েছে। আমাদের বিশ্বাসটা ফিরিয়েছে সে। আমরা ফিল্ডিংও ভালো করেছি। এই ম্যাচে অনেক ইতিবাচক দিক আছে।’
নিজের ব্যাটিং প্রসঙ্গে শাকিব আল হাসান বলেন, ‘আমি এশিয়া কাপে ভালো ব্যাট করিনি। এদিন যখন তাড়াতাড়ি উইকেটে যেতে হল, আমি ভাবলাম হাতে সময় আছে। নিজেকে সেট করলাম। যখন প্রথম বাউন্ডারি হাঁকালাম, তখন ভালো অনুভব করছিলাম। ওখান থেকে আমি খুব ভালো ব্যাট করেছি মনে হয়। উইকেটটা চ্যালেঞ্জিং ছিল। যখন বল পুরোনো হয়, ব্যাট করা একটু সহজ হয়েছে। কিন্তু স্পিনারদের খেলা কঠিন ছিল।’ এদিনের ম্যাচ জিতে নতুন করে বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবা শুরু করে দিয়েছে বংলাদেশ। গোটা এশিয়া কাপে খারাপ ফল করলেও, টিম ইন্ডিয়াকে হারিয়ে নতুন করে অক্সিজেন পেয়েছে শাকিব আল হাসানরা।