এবারের অনূর্ধ্ব-২৩ সিকে নাইডু ট্রফি জিতে নিল কর্ণাটক। ফাইনালে মুখোমুখি হয় কর্ণাটক এবং উত্তরপ্রদেশ। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় কর্ণাটক। প্রথম ইনিংসেই বড় রানের ইনিংস খেলে তারা। ৩৫৮ রান তোলে কর্ণাটক। দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন ম্যাকনেইল (৬৮) এবং যশবর্ধন (১০৫)। এছাড়াও কৃষ্ণ ৬৬ রানের ইনিংস খেলেন। আর তাতেই বড় রানে পৌঁছে যায় কর্ণাটক। বলা ভালো উত্তরপ্রদেশের বোলারদের নিয়ে কার্যত ছেলে খেলা করে তারা। ফলে বড় রান করতে খুব একটা সমস্যা হয়নি তাদের।
প্রথম ইনিংসে উত্তরপ্রদেশের হয়ে একমাত্র ভিপরাজ নিগম ৪টি উইকেট নেন। এছাড়া দুটি করে উইকেট নেন শুভম। একটি করে উইকেট নেন আকিব, কুনাল এবং কে সিং। এছাড়া আর কেউ উইকেট নেয়নি। ততক্ষণে ২২ গজে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কর্ণাটকের ব্যাটাররা। ৩৫৮ রান তোলে তারা। ফলে পাহাড় সমান রান দেখে প্রথম থেকেই চাপে পড়ে যায় উত্তরপ্রদেশ। তবে খেলা তখনও বাকি ছিল।
শুধু ব্যাটিং নয়, পাশাপাশি দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেন কর্ণাটকের বোলাররাও। উত্তরপ্রদেশের ব্যাটারদের নিয়ে কার্যত ছেলে খেলা করেন পরস, মনীশ খান এবং ম্যাকনেইলরা। তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে উত্তরপ্রদেশের ব্যাটিং লাইনআপ। বিশেষ করে পরস গুরবক্স পাঁচটি উইকেট নেন। মূলত তিনিই বিপক্ষের ব্যাটিং অর্ডার চিড় ধরিয়ে দেন। শুধু এই বোলারই নয়, একই সঙ্গে মনীশ খান এবং ম্যাকনেইল দুটি করে উইকেট নেন। উত্তর প্রদেশের প্রথম ইনিংস শেষ হয় মাত্র ১৩৯ রান। ঠিক তখন থেকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গন্ধ পেতে শুরু করে দেয় কর্ণাটক।
দ্বিতীয় ইনিংসেও ফের বড় রান করে তারা। বিশেষ করে ব্যাটিং হাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন অনীশ। ডবল সেঞ্চুরি করেন তিনি। ২৭৩ বলে করেন ২১৪ রান। তাঁর এই ইনিংসটি সাজানো ছিল ১৮টি বাউন্ডারি এবং ৬টি ওভার বাউন্ডারির সৌজন্যে। এছাড়াও ম্যাকনেইল (৭৯), প্রখর (৮৬) এবং কৃষ্ণ (৮৬) রান করেন। ব্যাটারদের দাপটে দ্বিতীয় ইনিংসে ৫৮৫ রান করে কর্ণাটক। প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও বড় রান। স্বাভাবিক ভাবেই এই ট্রফি যে তাদের কাছেই যাচ্ছে, তা যেন এক প্রকার নিশ্চিত করে ফেলে কর্ণাটক।
দ্বিতীয় ইনিংসেও উত্তর প্রদেশের ব্যাটারদের ব্যর্থতা পিছু ছা়ড়েনি। ওপেন করতে নামা রুতুরাজ শর্মা খাতা খুলতে না পেরেই ফিরে যান। ফলে শুরুতেই ধাক্কা খায় তারা। পিচে লড়াই চালিয়ে যান সস্ত্বিক। ৬৭ রান করেন তিনি। সেই সঙ্গে আরও এক ব্যাটার ভিপরাজ ৭৩ রান করে লড়াই চালিয়ে যান। কিন্তু পারেননি। দিনের শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৪ রান তোলে উত্তর প্রদেশ। ম্যাচ ড্র হয়। কিন্তু প্রথম ইনিংসে লিড নেওয়ায় চ্যাম্পিয়ন হয় কর্ণাটক।
প্রসঙ্গত, এই ম্যাচে বিতর্কিত ঘটনও ঘটে। উত্তরপ্রদেশের কুণাল ত্যাগীর বলটা পিচে পড়ে লেগসাইডের দিকে চলে যায়। পুল মারতে যান প্রখর। কিন্তু বলটা উইকেটকিপারের হাতে চলে যায়। নিজের বাঁ-দিকে কিছুটা ঝাঁপিয়ে বলটা ধরে ফেলেন আরাধ্য যাদব। কিন্তু মাটিতে পড়তেই তাঁর হাত থেকে বল ছিটকে বেরিয়ে যায়। বলটা মাটি থেকে কুড়িয়ে নিয়ে বোলারের সঙ্গে কট-বিহাইন্ডের জন্য জোরালো আবেদন করতে থাকেন। প্রাথমিকভাবে আঙুল না তুললেও আরাধ্য আবেদন করার পর আউট বলে জানিয়ে দেন অনফিল্ড আম্পায়ার। তিনি যখন আঙুল তুলছিলেন, তখন আরাধ্য মাটি থেকে বলটা টেনে নিজের গ্লাভসের মধ্যে ঢুকিয়ে নিয়ে সেলিব্রেশন করতে দৌড়ান।
আর সেই সিদ্ধান্তে হতবাক হয়ে যান প্রখর। হাত তুলে আম্পায়ারকে নিজের হতাশা প্রকাশ করতে থাকেন। কিন্তু আম্পায়ার নিজের সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। ফলে মাঠ ছাড়তে হয় প্রখরকে। সেই ঘটনায় উত্তরপ্রদেশের উইকেটকিপার আরাধ্যের স্পিরিট নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও আম্পায়ার কীভাবে এরকম মারাত্মক ভুল করলেন, তা ভেবে উঠতে পারছেন না কেউ। কারণ ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে যে যখন আরাধ্যের হাত থেকে বলটা বেরিয়ে যাচ্ছিল, তখন সেদিকেই তাকিয়ে ছিলেন আম্পায়ার।