শুভব্রত মুখার্জি: কয়েক দিন আগেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছিলেন ইংল্যান্ডের ক্রিকেট ইতিহাসে অন্যতম সেরা স্পিনার ডেরেক আন্ডারউড। আর সেই শোকের ছায়া কাটতে না কাটতেই ফের একবার শোকের ছায়া নেমে এল ইংল্যান্ডের ক্রিকেট জগতে। ইংল্যান্ডের প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা এক সময়ের ম্যাচ রেফারি রমন সুব্বা রাও শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন সম্প্রতি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। ইংল্যান্ডের এই প্রাক্তন ক্রিকেটার দলের হয়ে টেস্টে ওপেনার হিসেবেও খেলেছেন। পাশাপাশি বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা আইসিসির মাচ রেফারিও ছিলেন। এখানেই শেষ নয় দক্ষ ক্রিকেট প্রশাসক হিসেবেও জনপ্রিয় ছিলেন রামন সুব্বা রাও।
৯২ বছর বয়সে প্রয়াত হন সুব্বা রাও। তাঁর মৃত্যুর সময়ে তিনিই ছিলেন ইংল্যান্ডের বয়স্কতম টেস্ট ক্রিকেটার। ১৯৫৮ সালে ইংল্যান্ডের হয়ে অভিষেক হয় তাঁর। জাতীয় দলের হয়ে টানা তিন বছর খেলেছেন তিনি। ১৯৬১ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডের হয়ে ১৩টি টেস্ট খেলেছিলেন সুব্বা রাও। তাঁর ব্যাটিং গড় ছিল ৪৬.৮৫। ব্যাটার হিসেবে যথেষ্ট দক্ষ ছিলেন তিনি। ওই সময়ে আঢাকা পিচে পেসারদের বিরুদ্ধে ব্যাট হাতে বুক চিতিয়ে লড়াই করতেন তিনি। তবে মাত্র ২৯ বছর বয়সেই তিনি ২২ গজ থেকে অবসর নেন।
আরও পড়ুন: ছন্নছাড়া ক্যাপ্টেন্সি, দেরি হল ফিল্ড সাজাতে, বড় জরিমানার মুখে পড়লেন হার্দিক
ক্রিকেট খেলা ছাড়ার পর তিনি জনসংযোগ অর্থাৎ একটি পিআর ফার্ম খোলেন। কিন্তু ক্রিকেটের সঙ্গে তাঁর সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়নি। ইংল্যান্ডের প্রখ্যাত কাউন্টি ক্লাব সারের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। সারের ঘরের মাঠ ওভালের আধুনিকিকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল তাঁর। বর্তমান ইসিবি অর্থাৎ ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের প্রতিষ্ঠাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল সুব্বা রাওয়ের। ১৯৮৫-১৯৯০ সালে ইসিবির চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। ইংল্যান্ড দলের ম্যানেজারের ভূমিকাতেও কাজ করেছেন। ১৯৯২ থেকে ২০০১ সালের দীর্ঘ ৯ বছর মধ্যে ৪১টি টেস্টের পাশাপাশি ১১৯টি ওয়ানডেতে আইসিসির হয়ে ম্যাচ রেফারির দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি। সুব্বা রাওয়ের সারের হয়ে অভিষেক হয় ১৯৫৩ সালে। পরবর্তীতে তিনি নর্দাম্পটনশায়ারে যোগ দেন। তাদের অধিনায়কত্বও করেন। তাঁর মৃত্যুর পরে তিনি রেখে গেলেন স্ত্রী, আট নাতি-নাতনি, এক মেয়ে ও ছেলে, এক প্রপৌত্রকে।
একবার বড়দিনে ক্লাবের অ্যাকাউন্টে টাকা না থাকাতে সুব্বা রাও নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে সারের কর্মীদের বোনাস দিয়েছিলেন। সুব্বা রাওয়ের মৃত্যুর ঘটনায় ইসিবির চেয়ারম্যান রিচার্ড টমসন বলেছেন, ‘অসাধারণ এক ক্রিকেট ব্যক্তিত্ব ছিলেন। মাঠে এবং মাঠের বাইরে খেলোয়াড়, কর্মকর্তা, প্রশাসক এবং সারে ও টেস্ট অ্যান্ড কাউন্টি ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে অসাধারণ এক ক্রিকেট ক্যারিয়ারে সফল ছিলেন।’ আইসিসির পক্ষ থেক তাঁর মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করেছেন ওয়াসিম খানও।