অবশেষে শাপমোচন। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়র লিগে ৫ বার ফাইনালে উঠেও এবকবারও খেতাব তুলতে পারেনি গুয়েনা অ্যামাজন ওয়ারিয়র্স। অবশেষে ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়র লিগ চ্যাম্পিয়ন হল তারা। ত্রিবাগো নাইট রাইডার্সকে নিয়ে কার্যত ছেলে খেলা করত গুয়েনা ওয়ারিয়র্স। সিপিএলের অন্যতম সেরা দলকে মাত্র ৯৪ রানে আটকে দেয় তারা। ফাইনালের মতো ম্যাচে এই রান যে কোনও ভাবেই জেতার সম্ভাবনা রাখে না, তা একবার ফের পরিস্কার করে দিল।
এদিন টসে জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন গুয়েনার অধিনায়ক ইমরান তাহির। নাইটদের প্রথমে ব্যাট করতে পাঠিয়ে মাত্র ৯৪ রানের মধ্যে আটকে দিতে সক্ষম হয় তারা। নাইটদের ব্যাটিং অর্ডার দেখলে এটা মনে হতেই পারে, ব্যাটাররা এসেছেন আর গিয়েছেন। সেইভাবে দাঁড়াতেই পারেনি কেউ। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে।
তবে শুরুটা অপেক্ষাকৃত ভালোই হয়। ওয়ালটন এবং মার্ক দেওয়াল কিছুটা হলেও শুরুতে রানের গতি বজায় রাখার চেষ্টা করেন। যদিও তারা বড় রান করতে পারেননি। ওয়ালটন ১১ বলে ১০ রান এবং মার্ক ৯ বলে ১৬ রান করে ফিরে যান। এমনকী নিকোলাস পুরানও এদিন মাত্র ১ রান করেন। স্বাভাবিক ভাবেই পরপর উইকেট হারাতে থাকে ত্রিনিদাদ। একটা সময় মাত্র ৪৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে শাহরুখ খানের দল। এই পরিস্থিতি থেকে কাটিয়ে ওঠার জন্য অনেক চেষ্টা চালান ব্রাভো, আন্দ্রে রাসেলরা। কিন্তু কোনও উপার বের করতে পারেননি তারা। নাইট ক্রিকেটাররা এলেন আর গেলেন। একমাত্র কার্টি ৪৫ বলে ৩৮ রানের ইনিংস খেলেন ২টি বাউন্ডারি এবং ১টি ওভার বাউন্ডারির সৌজন্যে। নাইটদের ইনিংসের সর্বোচ্চ রান করেন কার্টি। ১৮.১ ওভারে মাত্র ৯৪ রানে অলআউট হয়ে যায় ত্রিনিদাদ। দুর্দান্ত বোলিং করেন প্রিটোরিয়াস। ৪ ওভার বল করে ২৬ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন তিনি।
মাত্র ৯৫ রানের টার্গেট নিয়ে ব্যাট করতে নামলে মাত্র ১৪ ওভারেই সেই রান তুলে নেয়। শুরু থেকেই দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন গুয়েনা অ্যামাজন ওয়ারিয়র্স। সাইম আয়ূব এবং কিমো পল ওপেন করতে নামেন। শুরু থেকেই দাপুটে ইনিংস খেলতে থাকেন গুয়েনা। যদিও কিমো পল মাত্র ১১ রান করে ফিরে যান। এরপরই নামেন শাই হোপ। এই দুই ব্যাটার বিপক্ষ দলের বোলারদের কোনও রকম তোয়াক্কাই করেননি। দাপুটে ইনিংস খেলে ম্যাচের রং বদলে দেন তিনি। আয়ূব দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। ৪১ বলে অপরাজিত ৫২ রান করেন তিনি। তাঁর ইনিংসটি সাজানো ছিল ২টি বাউন্ডারি এবং ৫টি ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে। এছাড়া হোপ ৩২ বলে ৩২ রান করেন মাত্র ২টি বাউন্ডারির সৌজন্যে। ৯ উইকেটে ম্যাচ জিতে প্রথমবার সিপিএল চ্যাম্পিয়ন হল গুয়েনা। ম্যাচের সেরা হয়েছেন প্রিটোরিয়াস এবং টুর্নামেন্টের সেরা হয়েছেন শাই হোপ।
ম্যাচ শেষে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন ইমরান। ধন্যবাদ জানান রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে। তিনি বলেন, ‘অশ্বিনকে অনেক ধন্যবাদ। মরশুম শুরুর আগে সে আমাকে বলে, আমি সিপিএল জিততে পারি। আমাকে অধিনায়ক করার পর অনেকেই রসিকতা করে। আমি কিছু বলিনি।’ সিপিএলের ইতিহাসে ইমরান তাহির সবচেয়ে বয়স্ক ক্রিকেটার যিনি টি-২০ চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। বর্তমানে তাঁর বয়স ৪৪ বছর ১৮১ দিন। তাঁর ঠিক পরেই রয়েছেন গ্যারেথ বেটি যিনি ২০২০ সালে টি-টােয়েন্টি ব্লাস্ট জিতেছেন। তখন তাঁর বয়স ছিল ৪২ বছর ৩৫৭ দিন। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন ধোনি। ২০২৩ আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সময় তাঁর বয়স ছিল ৪১ বছর ৩২৫ দিন।