সেমিফাইনালে ধুমধাড়াক্কা ক্রিকেট উপহার দিয়ে গতবারের চ্যাম্পিয়নদের ছিটকে দেন করুণ নায়াররা। ফাইনালেও মারকাটারি ক্রিকেট খেলেন তাঁরা। তা সত্ত্বেও রুদ্ধশ্বাস খেতাবি লড়াইয়ে শেষ ওভারে হারতে হয় মাইসোর ওয়ারিয়র্সকে। শেষ ওভারের থ্রিলার জিতে মহারাজা ট্রফি ২০২৩-এর খেতাব হাতে তোলে মণীশ পান্ডের নেতৃত্বাধীন হুবলি টাইগার্স।
উল্লেখ্য, এবছর লিগ টেবিলে এক নম্বরে থেকে সেমিফাইনালে ওঠে হুবলি। সেদিক থেকে দেখলে পারফর্ম্যান্সের নিরিখে সেরা দলের হাতেই উঠল খেতাব। আরও উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ক্যাপ্টেন হিসেবে টানা ২ বছর কর্ণাটক ক্রিকেট সংস্থার ঘরোয়া টি-২০ ট্রফি হাতে তুললেন মণীশ পান্ডে। গতবছর তিনি ক্যাপ্টেন হিসেবে গুলবার্গা মিস্টিকসকে চ্যাম্পিয়ন করান। সেবার একদা জাতীয় দলের সতীর্থ মায়াঙ্ক আগরওয়াল ছিলেন মণীশের প্রতিপক্ষ দল বেঙ্গালুরু ব্লাস্টার্সের কাণ্ডারী। এবার অধিনায়ক হিসেবে হুবলি টাইগার্সকে চ্যাম্পিয়ন করান মণীশ। এবার তাঁর বিপক্ষ দলের ক্যাপ্টেন হলেন জাতীয় দলের আরও এক সতীর্থ করুণ নায়ার।
হুবলি টাইগার্স বনাম মাইসোর ওয়ারিয়র্স ফাইনালের গতিপ্রকৃতি:-
চিন্নাস্বামীতে টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নামে হুবলি টাইগার্স। তারা নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটের বিনিময়ে ২০৩ রানের বড়সড় ইনিংস গড়ে তোলে। ৭টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে ৪০ বলে ৭২ রানের আগ্রাসী ইনিংস খেলেন মহম্মদ তাহা। তিনি ৬টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ২৭ বলে ব্যক্তিগত হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন।
ক্যাপ্টেন মণীশ ৩টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে ২৩ বলে ৫০ রানের ধ্বংসাত্মক ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন। এছাড়া কৃষ্ণান শ্রীজিৎ ৩৮, সঞ্জয় অশ্বিন ১৬ ও মানবন্ত কুমার ১৪ রানের যোগদান রাখেন। মাইসোরের অজিত কার্তিক ২টি উইকেট নেন। জগদীশা সূচিত ১টি উইকেট সংগ্রহ করেন।
জয়ের জন্য ২০৪ রানের লক্ষ্যমাত্রা সামনে নিয়ে পালটা ব্যাট করতে নামে মাইসোর ওয়ারিয়র্স। তারা ২০ ওভারে ৮ উইকেটের বিনিময়ে ১৯৫ রান আটকে যায়। অর্থাৎ, তীরে এসে তরী ডোবে ওয়ারিয়র্সের। ৮ রানের সংক্ষিপ্ত ব্যবধানে ম্যাচ জিতে চ্যাম্পিয়ন হয় হুবলি। শেষ ওভারে জয়ের জন্য মাইসোরের দরকার ছিল ১২ রান। তবে তারা মানবন্তর শেষ ওভারে ২টি উইকেট হারিয়ে মাত্র ৩ রান সংগ্রহ করে।
রবিকুমার সামর্থ ৪টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে ৩৫ বলে ৬৩ রান করেন। ক্যাপ্টেন করুণ নায়ার ৬টি বাউন্ডারির সাহায্যে ২০ বলে ৩৭ রান করে আউট হন। এসইউ কার্তিক ২৮, লঙ্কেশ ১৩, অজিত কার্তিক ১৮, জগদীশা সূচিত ১৩ ও শিবকুমার রক্ষিত ১০ রানের যোগদান রাখেন। মানবন্ত ৩টি ও কাভেরাপ্পা ২টি উইকেট দখল করেন।
আরও পড়ুন:- CPL 2023: ক্রিকেটের ইতিহাসে এই প্রথম, লাল কার্ড দেখে মাঠের বাইরে যেতে হল নারিনকে- ভিডিয়ো
টানা ২টি মরশুমের ফাইনালের সেরা মণীশ পান্ডে:-
গতবছর গুলবার্গার ক্যাপ্টেন হিসেবে ট্রফি হাতে তোলা ছাড়াও ১৭ বলে অপরাজিত ৪১ রান করে ফাইনালের সেরা ক্রিকেটার নির্বাচত হন মণীশ পান্ডে। এবার হুবলির ক্যাপ্টেন হিসেবে ট্রফি হাতে তোলা ছাড়াও ঝোড়ো হাফ-সেঞ্চুরি করে ফাইনালের সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার জেতেন পান্ডে।
টুর্নামেন্টের সেরা মহম্মদ তাহা:-
করুণ নায়ার ১টি শতরান ও ৩টি অর্ধশতরান-সহ টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ৫৩২ রান সংগ্রহ করেন। তবে তাঁকে টপকে টুর্নামেন্টের সেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার জেতেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী মহম্মদ তাহা। তিনি ৬টি অর্ধশতরান-সহ ৪৪৮ রান সংগ্রহ করেন। করুণ নায়ারকে এক্ষেত্রে ট্র্যাজিক হিরো হয়ে থেকে যেতে হয়।