এশিয়া মহাদেশে শুরু হয়েছে এশিয়া কাপ। অন্যদিকে বাকি দলগুলি নিজেদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলছে। সব দলই টুর্নামেন্ট বা ম্যাচ জিতে চাইলেও তাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে বিশ্বকাপের আগে নিজেদেরকে ঝালিয়ে নেওয়া। ঠিক তেমন হবেই বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া দল। সেখানে টি-টোয়েন্টি সিরিজের খেলা শুরু হয়েছে। প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচেই বড় ব্যবধানে জয় পেল অস্ট্রেলিয়া। নতুন অধিনায়কের অধীনে নেমে দুরন্ত পারফরম্যান্স করেছে আজি বাহিনী।
টসে জিতে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাট করতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক এডেন মার্করাম। ব্যাট করতে নেমে প্রথমেই উইকেট পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার। ইনিংসের তিন নম্বর বলে আউট হন অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার ট্র্যাভিস হেড। ৬ রানের মাথায় প্রথম উইকেট পড়ে যাবার পর কিছুটা সামলে নেয় অস্ট্রেলিয়া ধীরে ধীরে ইনিংস গোছাতে থাকে তারা। হেড প্যাভেলিয়ানে ফিরে যাওয়ার পর ব্যাটে নামেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক মিচেল মার্শ। আক্রমনাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে থাকেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৪৯ বলে ৯২ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। তাঁর এই ইনিংসটি সাজানো ছিল ১৩টি বাউন্ডারি এবং ২টি ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে।
শেষের দিকে নেমে ২৮ বলে ৬৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন টিম ডেভিড। তাঁর ইনিংসটি সাজানো ছিল ৭টি বাউন্ডারি এবং ৪টি ওভার বাউন্ডারির সৌজন্যে। এর ফলে নির্ধারিত কুড়ি ওভারে ছয় উইকেট হারিয়ে ২২৬ রান তোলে ক্যাঙ্গারু বাহিনী। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে তিন উইকেট নেন উইলিয়ামস। একটি করে উইকেট পান তাবরেজ শামসি, জেরাল্ড কোয়েটজি, মার্কো জানসেন।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকে খোড়াতে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকার। ২টি বল খেলে শূন্য রানে আউট হয়ে যান দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনার তেম্বা বাভুমা। তবে আরওএক ওপেনার রিজা হেন্ডরিক্স দলকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ৪৩ বলে ৫৬ রানের একটা পদস্থ ইনিংস খেলেন তিনি। কিন্তু তার পরের কোনও ব্যাটার পিচে এসে টিকতে পারেননি। অস্ট্রেলিয়া বোলিং এর সামনে কার্যত তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে তাদের ব্যাটিং লাইনআপ।
এই ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার ৮ জন ক্রিকেটার দুই অঙ্কের ঘরে স্কোর করতে পারেননি। ফলে মাত্র ১৫.৩ ওভারে ১১৫ রানে গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস। ১১১ রানে ম্যাচ জিতে নেয় অজিরা। এটি দক্ষিণ আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানে ম্যাচ হার। এর আগে ২০২০ সালে অজিদের বিরুদ্ধেই ১০৭ রানে ম্যাচ হারে প্রোটিয়ারা। সেবারই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৯৭ রানে ম্যাচ হারে দক্ষিণ আফ্রিকা। ২০০৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৯৫ রানে ম্যাচ হারার রেকর্ড রয়েছে প্রোটিয়াদের। ২০১৩ সালে ৯৫ রানে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হারতে হয় তাদের। ২০২২ সালে ভারতের বিরুদ্ধে ৮২ রানে হারে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ২০০৯ সালে অজিদের বিরুদ্ধে ৫২ রানে হারে প্রোটি ব্রিগেড।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে এদিন চার উইকেট নেন তনবীর সাঙ্ঘা। ২১ বছর বয়সী এই তরুণ বোলারের সামনে কার্যত আত্মসমর্পণ করেন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা। অন্যদিকে তিন উইকেট নেন মার্কাস স্টইনিস। ম্যাচের সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার নতুন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মিচেল মার্শ। এখন দেখার এই হার কাটিয়ে কত তাড়াতাড়ি ফিরতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা।