শুভব্রত মুখার্জি:- একটা সময়ে ভারতীয় ক্রিকেটের আকাশে তাঁর উত্থানটা হয়েছিল অনেকটা ধ্রুবতারার মতন। তিনি করুণ নায়ার। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত পারফরম্যান্স করে তিনি জায়গা করে নিয়েছিলেন ভারতীয় সিনিয়র দলে। সেখানেই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে একটি টেস্টে তাঁর ব্যাট হাতে অনবদ্য পারফরম্যান্স নজর কেড়েছিল বিশেষজ্ঞদের। খেলেছিলেন ত্রিশতরানের একটি ইনিংস।
অবশ্য সেই ইনিংস খেলার পরে তিনি শিরোনামে উঠে এলেও এরপর জাতীয় দলের হয়ে তেমন বলার মতন পারফরম্যান্স তিনি করে উঠতে পারেননি। ফলে একটা সময়ে তাঁকে বাদ পড়তে হয় জাতীয় দল থেকে। এরপর আর কোনও দিন তিনি জাতীয় দলে ফিরে আসার সুযোগ পাননি।
পাশাপাশি ২০২২-২৩ মরশুমে তাঁর রাজ্য কর্ণাটকও তাঁকে ছেঁটে ফেলেছিল। ফলে রাজ্য দল থেকে বাদ পড়ে সমস্যায় পড়তে হয় তাঁকে। যদিও তিনি চলতি ঘরোয়া মরশুমে বিদর্ভের হয়ে ফের ২২ গজে ফিরে এসেছেন। আর এই সবকিছু নিয়ে বলতে গিয়েই তিনি জানিয়েছেন, ঘরে বসে অন্যদেরকে খেলতে দেখাটা ছিল আরো বেশি কষ্টের।
প্রসঙ্গত সবে শেষ হয়েছে রঞ্জি ট্রফির এই মরশুমের ফাইনাল। ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল মুম্বই এবং বিদর্ভ। এই ফাইনালেই বিদর্ভের হয়ে খেলেছেন করুণ নায়ার। যদিও বিদর্ভকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে দিয়ে আট বছর বাদে রঞ্জি ট্রফির শিরোপা জিতেছে মুম্বই। ফাইনালে বিদর্ভের হয়ে প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে সাফল্য পাননি করুণ।তবে দ্বিতীয় ইনিংসে একটি ঝকঝকে ৭৪ রানের ইনিংস খেলেছেন। আর এরপরেই তিনি জানিয়েছেন ঘরে বসে অন্যদের খেলতে দেখতে তাঁর কতটা কষ্ট হত।
করুণ নায়ার জানিয়েছেন, ‘এই মরশুমে আমি ভালো ব্যাটিং করেছি। ব্যাট হাতে আমার পারফরম্যান্স আমার কাছে স্বস্তিদায়ক। কঠিন সময়ে দলের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস আমি খেলতে পেরেছি, যা আমাকে স্বস্তি দেবে। আমি কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে বেশ কয়েকটা ম্যাচ খেলেছি। সেখানেও আমি ব্যাট হাতে ছন্দে ছিলাম। রান পেয়েছি। আর এই রান পাওয়ার পরেই ধীরে ধীরে আমার আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছে।’
নায়ার আরও বলেন, 'ওভালে আমি ১৫০ রানের একটি ইনিংস খেলি। যেখানে কিন্তু পরিবেশ পরিস্থিতি বেশ কঠিন ছিল। এরপর যে আত্মবিশ্বাস আমি পাই তা ধরে রেখেই আমি সামনের দিকে এগিয়ে যাই। আমার মনে হয়েছিল আমি যদি ওখানে (ইংল্যান্ডে) স্কোর করতে পারি, তাহলে পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তে রান করতে পারব। প্রায় একটা বছর আমি খেলিনি। আমার জন্য বিষয়টা খুব কঠিন ছিল। এই বিষয়টি নিয়ে আমি কী বলব আমি জানি না। ঘরে বসে অন্যদেরকে ক্রিকেট খেলতে দেখাটা আমার কাছে খুব কষ্টের ছিল। আমি এখনও একশো শতাংশ মনে করি আমি জাতীয় সিনিয়র দলে কামব্যাক করতে পারি। ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফরম্যান্স করা এবং ধারাবাহিকভাবে করা আমার লক্ষ্য।' উল্লেখ্য ৩২ বছর বয়সী তারকা ব্যাটার ভারতের হয়ে ছটি টেস্ট খেলেছেন।