ভারতের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের শুরুটা ভালো হয়নি ভারতীয় ক্রিকেট দলের। সিরিজের প্রথম টি টোয়েন্টি ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেসে যায়, পরে সিরিজের দ্বিতীয় টি টোয়েন্টিতে হারতে হয়েছিল সূর্যদের, তবে শুরুটা খারাপ হলেও পরে নিজেদের সামলে নিয়েছে টিম ইন্ডিয়া। তা সে টি টোয়েন্টিতে হোক কিমবা ‘এ’ দল লড়াই। একদিকে সূর্যের ঝড়ে সিরিজের শেষ টি টোয়েন্টিতে উড়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা, অন্যদিকে দুরন্ত পারফর্ম করল ভারতীয় ‘এ’ দল।
টি টোয়েন্টিতে যখন সূর্য-রিঙ্কুরা চমক দেখাচ্ছেন তখন শার্দুল ঠাকুর, প্রসিধ কৃষ্ণারও ভারতীয় ‘এ’ দলের হয়ে জ্বলে উঠেছেন। তাদের ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের ফলে দক্ষিণ আফ্রিকা ‘এ’ দলের হয়ে। শার্দুল ঠাকুর ও প্রসিধ কৃষ্ণা দুজনেই খেলছেন ভারতীয় ‘এ’ দলের হয়ে। এই ম্যাচে প্রসিধ কৃষ্ণা হ্যাটট্রিক করে ভক্তদের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও, শার্দুল তার শক্তিশালী ব্যাটিং দিয়ে পেস অলরাউন্ডারের জায়গা দাবি করেছেন।
১১ ডিসেম্বর থেকে ভারত ‘এ’ এবং দক্ষিণ আফ্রিকা ‘এ’-এর মধ্যে চারদিনের ম্যাচ শুরু হয়েছিল। ম্যাচের চতুর্থ দিনে খেলা শেষ হওয়া পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করতে নেমেছিল এবং তাদের স্কোর ছিল ১৫২ রানে ২ উইকেট। যদিও ম্যাচটি ড্র বলে ঘোষণা করা হয়েছিল, তবু ভারত এই ম্যাচে নিজেদের প্রাধান্য বজায় রেখেছিল। এই ম্যাচে প্রথমে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ভারত। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৩১৯ রানেই শেষ হয়েগিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা ‘এ’ দলের ইনিংস। এই সময়ে হ্যাটট্রিক সহ পাঁচ উইকেট শিকার করেন প্রসিধ কৃষ্ণা। এছাড়াও সৌরভ কুমার তিনটি উইকেট নিয়েছিলেন।
প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৮৬.৫ ওভারে ভারত স্কোর বোর্ডে ৪১৭ রান তুলেছিল। এই সময়ে ৯৮ বলে ৭৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন শার্দুল ঠাকুর। এই সময়ে তিনি ৯টি চার ও ২টি ছক্কা মেরেছিলেন। এছাড়াও প্রদোষ রঞ্জন পাল ২০৯ বলে ১৬৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। এই সময়ে ২৩টি চার ও একটি ছক্কা মেরেছিলেন প্রদোস। সাই সুদর্শন ১৮ বলে ১৪ রান করেন এবং দেবদূত পাডিক্কাল ৩৭ বলে ৩০ করে আউট হন। এই সময়ে সরফরাজ খান ৮৫ বলে ৬৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। এই সময়ে তিনি সাতটি চার ও একটি ছক্কা মেরেছিলেন।
তৃতীয় দিনের স্টাম্প পর্যন্ত, ভারত ‘এ’ দল ৬ উইকেটে ৩৭৭ রান করেছিল। ভারতের হয়ে ১৬৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন প্রদোষ রঞ্জন পাল। সরফরাজ খান ও শার্দুল ঠাকুরের দারুণ সঙ্গে পেয়েছেন প্রদোষ পাল। সরফরাজ খান করেন ৬৮ রান। তৃতীয় দিনে ৭০ রান করার পরও অপরাজিত ছিলেন শার্দুল ঠাকুর। এরপরে মাত্র ৬ রান যোগ করে আউট হয়ে যান তিনি।
এই ম্যাচের অলরাউন্ডার ইনিংস খেলে শার্দুল তাঁর প্রচেষ্টাকে তুলে ধরেন ও তাতে তিনি সফলও হন। এর ফলে আসন্ন ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম টেস্টের প্লেয়িং ইলেভেনের জন্য নিজের দাবি মজবুত করেছেন শার্দুল ঠাকুর। ভারতীয় দল সাধারণত টেস্ট ম্যাচে পাঁচটি বোলিং অপশন দেয়। ভারতে যখন ম্যাচ হয়, তখন ৩ বিশেষজ্ঞ পেসার এবং ২ স্পিন অলরাউন্ডার রবিচন্দ্রন অশ্বিন এবং রবীন্দ্র জাদেজার প্লেয়িং কম্বিনেশন শক্তিশালী থাকে। কিন্তু অনেক সময় বিদেশে ভারত বেছে নেয় একজন স্পিন অলরাউন্ডার এবং চারজন পেসার। এই পারফরমেন্সের ফলে এই প্লেয়িং কম্বিনেশনে শার্দুল ঠাকুরের দাবি জোরালো হতে পারে। এই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে তিনি একটি উইকেটও শিকার করেছিলেন।
এর আগে ভারত এ দল স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা একে ৩১৯ রানে অলআউট করে। স্বাগতিক দলকে তাড়াতাড়ি আউট করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন প্রসিধ কৃষ্ণ। তিনি নিয়েছেন ৫ উইকেট। এর মধ্যে একটি হ্যাটট্রিকও রয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা দলের হয়ে সেঞ্চুরি করেন জিন ডু প্লেসিস (১০৬)। তিন ম্যাচে এটি তার তৃতীয় সেঞ্চুরি। ডু প্লেসিস এর আগে ঘরোয়া ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ডাবল সেঞ্চুরি এবং দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ২ উইকেট হারিয়ে ১৫২ রান তুলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা ‘এ’ দল।