শুভব্রত মুখার্জি- তৃতীয় শিরোপা জয়ের আশা নিয়েই রবিবার আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে ওডিআই বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলতে নেমেছিল ভারতীয় দল। গোটা টু্র্নামেন্ট জুড়ে রোহিত শর্মার নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দল যে ক্রিকেট খেলেছিল তাতে করে ফাইনালের ফেভারিট দলও ছিলেন তারা। কিন্তু ভারতের ট্রফি জয়ের স্বপ্নের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়ালেন ভারতীয় বোলারদের পুরনো এক 'শত্রু'। শেষবার ভারত বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে হেরেছিল এই অস্ট্রেলিয়ার কাছে। যিনি দুই দলের ফারাক সেদিন গড়ে দিয়েছিলেন তিনি ট্র্যাভিস হেড। সেদিন ১৬৩ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে ভারতের হার নিশ্চিত করেছিলেন হেড। আর এদিন ওডিআই বিশ্বকাপের ফাইনালেও একই কাজ করলেন তিনি। ১৩৭ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে ভারতের হার নিশ্চিত করে দেন তিনি। ম্যাচ শেষে তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য এতটা আশাই করিনি। এক অসাধারণ দিন ছিল অস্ট্রেলিয়ার জন্য। এদিন আমি আমার ইনিংসের প্রথম ২০ বল খেলেই আত্মবিশ্বাস পেয়েছিলাম।
ম্যাচ শেষে ফাইনালের সেরা হয়ে হেড জানিয়েছেন, ‘এতটা আশাই করিনি। কয়েক হাজার বছরেও এমনটা হতে পারে বলে ভাবিনি। সত্যি বলতে আমাদের কাছে আজকের দিনটা একটা অসাধারণ দিন ছিল। ঘরে সোফায় বসে থাকার চেয়ে ২২ গজে নেমে এই লড়াই করতে পারাটা অনেক স্বস্তির। আমি দলের জয়ে যোগদান রাখতে পেরে খুব খুশি। আমার ইনিংসের প্রথম ২০ বল খেলা আমাকে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছিল। আর এটাও বলতে হবে এদিন আমি ইনিংসটা চালিয়ে যেতে পেরেছি আউট না হয়ে। যেভাবে মিচেল মার্শ নেমেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করে তারা আমাদের দলের ব্যাটিংয়ের সুরটা বেঁধে দিয়েছিল। এই এনার্জিটাই আমরা মাঠে দেখাতে চেয়েছিলাম।’
হেড আরও যোগ করেছেন, ‘উইকেটে প্রথমদিকে বল হাল্কা স্পিন করেছে।আমাদের পক্ষে তা সহায়ক হয়েছে। জয়ী দলের সদস্য থাকতে পারাটা গর্বের।আর সেই জয়ে যোগদান করতে পারাটা আরও গর্বের। এই বিশ্বের সবথেকে দুর্ভাগা ব্যক্তি মনে হয় ও (রোহিত শর্মা)। আমি ফিল্ডিং নিয়ে গত কয়েক মাসে খুব খাটা খাটনি করেছি। আমি স্বপ্নেও ভাবিনি আজ শতরান করব। ভাবিনি যে ওই ক্যাচটা (রোহিতের) আমি ধরতে পারব। ওই ক্যাচটা ধরতে পারাটা অসাধারণ একটা বিষয় ছিল। এত দর্শকদের সামনে পারফরম্যান্স করতে পারা, দলের জয় নিশ্চিত করতে পারাটা আমার কাছে বেশ গর্বের বিষয়।’
বিশ্বকাপ ফাইনালে শতরান করে অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, রিকি পন্টিংয়ের নজির ছোঁয়া প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘ওই লিস্টে আমি তৃতীয় ব্যক্তি। ওই লিস্টে যুক্ত হতে পারাটা বেশ ভালো একটা বিষয় আমার কাছে। মাঠে নেমে দলের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারাটা আনন্দের। আমি সবসময়ে দলের ছেলেদের বলে এসেছি আমি তাদের সঙ্গে পুনঃমিলনের (চোট সারিয়ে বিশ্বকাপের দলে ফেরা) জন্য মুখিয়ে রয়েছি।’ প্রসঙ্গত এদিন মাত্র ১২০ বল খেলে ১৩৭ রান করেন হেড। তাঁর ইনিংস সাজানো ছিল ১৫ টি চার এবং চারটি ছয়ে। তাঁর অনবদ্য শতরানে ভর করেই ৬ উইকেটের বড় ব্যবধানে ফাইনাল ম্যাচ জিতে যায় অস্ট্রেলিয়া।