পঞ্চায়েত ভোটের আগে টিকিট বিল নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে জেলায় জেলায় অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। সেই আবহে টিকিট বিক্রির অভিযোগ উঠেছিল বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারীর বিরুদ্ধে। অবশ্য সেই অভিযোগের পরে তৃণমূলের দুটি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন মনোরঞ্জন ব্যাপারী। সেক্ষেত্রে বলাগড়ের ব্লক সভাপতির সঙ্গে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে মনোরঞ্জনের। অন্যদিকে, মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ূন কবীরের সঙ্গে জেলা সভাপতি শাওনি সিংহ রায়ের দ্বন্দ্ব তুঙ্গে। সে ক্ষেত্রে শাওনির পদত্যাগের দাবি জানিয়ে দলের নেতৃত্বকে হুঁশিয়ারিও দেন হুমায়ূন কবীর। একের পর এক এই সমস্ত ঘটনা নিয়ে অস্বস্তিতে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে দল কোনওভাবেই যে বিশৃঙ্খলা করবে না তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ।
তৃণমূল মুখপাত্র বলেন, ‘এখন মনোনয়ন পর্ব এবং স্ক্রুটিনি শেষ হয়ে গিয়েছে। শুধু প্রচার চালানোর কাজে দলীয় নেতাদের ব্যস্ত থাকতে হবে। কারও কোনও কিছু অভিযোগ থাকলে ভোটের পর তা শোনা হবে। এখন ভোটে জয়ই হল তৃণমূলের একমাত্র লক্ষ্য। কোনওভাবেই কেউ এমন কিছু করবে না যাতে ভোটে প্রভাব পড়ে। দল তা বরদাস্ত করবে না।’ নাম না করে মনোরঞ্জন ব্যাপারীর বিষয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘মনোনয়ন পর্বে অনেক কষ্ট করেছেন। এখন বিশ্রাম নিন।’ প্রসঙ্গত, টিকিট বিক্রির অভিযোগ প্রসঙ্গে বলাগড়ের বিধায়ক ফেসবুক পোস্টে দলীয় নেতৃত্বের প্রতি ক্ষোভের কথা জানিয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ, ভোটে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কোনও আলোচনা করা হয়নি। এই ঘটনায় তিনি সিআইডি তদন্ত চেয়েছেন। ফেসবুক পোস্টে তিনি এমনও লিখেছেন যে, ‘আমার মতো মানুষদের জন্য রাজনীতি নয়।’ এমনকী বিধায়ক পদ ছাড়ার কথাও তিনি জানিয়েছেন।
এদিকে, হুমায়ুন কবীর কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছিলেন, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে শাওনি সিংহ রায়কে অপসারণ না করা হলে তিনি দলীয় কার্যালয় ঘেরাও করবেন। শুধু দলীয় নেতৃত্ব নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও এনিয়ে তিনি কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। যদিও সেই বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পরেই নিজের অবস্থান থেকে সরে দাঁড়ান হুমায়ুন। তিনি ক্ষমা চেয়ে নেন এবং সংবাদ মাধ্যমকে জানান, রাগের মাথায় এসব কথা তিনি বলে ফেলেছিলেন। তবে শাওনি সিংহ রায়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে ছাড়েননি। নাম না কুণাল ঘোষ দুই বিধায়ককে পরামর্শ দিয়েছেন, ‘কারও যদি কোনও সমস্যা থাকে তা পরিষদীয় দলের নেতৃত্বকে বলুন।’