মনোয়নন জমা দেওয়ার আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সতর্ক করেছিলেন, নির্দল হিসাবে পঞ্চায়েত ভোটে দাঁড়ালে দল তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে। পরে তাঁদের আর দলে ফিরিয়ে নেওয়া হবে না। মনোনয়ন জমা দেওয়া পর্বে দেখা গেল বহু জায়গায় দলীয় প্রার্থীকে না মেনে নির্দল হিসাবে দাঁড়িয়ে পড়েছেন অনেকে। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসাবে শনিবার ৫৬ জন নেতা কর্মীকে সাসপেন্ড করেছে তৃণমূল। শুধু কি টিকিট না পেয়ে নির্দল? হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার খোঁজে আরও নতুন তথ্য। বিদায়ী প্রধানের উপর নানা কারণে বিরক্ত হয়ে খোদ তৃণমূল কর্মীদের একাংশ নির্দল প্রার্থীকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর এক নম্বর ব্লকের উত্তর দুর্গাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১১১ এবং ১০২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারাও কার্যত ক্ষোভে ফুঁসছেন পঞ্চায়েত প্রধানের উপর।
এবারও বিদায়ী প্রধান লিপিকা মণ্ডল দাড়িয়েছেন উত্তর দুর্গাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ১১১ বম্বর ওয়ার্ডে। ওই এলাকার তৃণমূল কর্মীদের একাংশ নিজেরাই এগিয়ে এসে প্রধানের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়ে দিলেন। তাঁদের মূল অভিযোগ, উন্নয়নের কাজ নিয়ে নিয়মিত পক্ষপাতিত্ব করেছেন প্রধান। কাজ অনুমোদন হয়ে গেলেও তা আর হয়নি।
একই অভিযোগ গ্রামবাসীদেরও। ওয়ার্ডের বাসিন্দা নাজিমা বিবি বলেন, ‘আমাদের বাড়ি ঢোকার রাস্তার বেহাল অবস্থা। পাশে নিকাশিরও ভাল ব্যবস্থা নেই। বর্ষা কালে বাচ্চারা স্কুলে যায়য়াত করতে পারে না। মাঝে একবার রাস্তা ঠিক করার জন্য পঞ্চায়েত থেকে লোক এসে মাপঝোক করলেও তারপর আর কাজ হয়নি।’ কেন হচ্ছে না তা প্রধানের কাছে জানাতে গেলে তিনি খালি বলেন, কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না।
শুধু তাই নয় বিদায়ী প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতিরও অভিযোগ করছেন ওই তৃণমূল কর্মীরাও। এক তৃণমূল কর্মীর কথায়, গতবার আমরা লিপিকা মণ্ডলকে জিতিয়েছি। এবার আর নয়।' ঠারেঠোরে তাঁরা বুঝিয়ে দিয়েছেন নির্দল প্রার্থীকেই সমর্থন করবেন।
১১১ নম্বরের লাগোয়া ১০২ নম্বরেরও বাসিন্দাদের অভিযাগ প্রধান বিরুদ্ধে। ওই ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছিলেন নির্দলপ্রার্থী। সে কারণে বেশ কয়েকটি পাড়ায় উন্নয়নের কাজ করতে দেননি প্রধান বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। নাইয়া পাড়া বাসিন্দারা এবড়ো-খবড়ো রাস্তা দেখিয়ে অভিযোগ জানালেন, দীর্ঘ দিন ধরে বলা সত্ত্বেও রাস্তাটি সারানো হয়নি। খারাপ রাস্তার জন্য বর্ষাকালে বাচ্চারা প্রায়শই হোঁচট খেয়ে পড়ে যায়। এমন কি পাড়ার মধ্যে জল, আলোরও ব্যবস্থা করা হয়নি পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে। অনেক দূর থেকে পানীয় জল আনতে যেতে হয় বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
বিদায়ী পঞ্চায়েত সদস্য এবারেও নির্দল প্রার্থী আখতার হোসেন গাজি বলেন,'আমি বারবার বলা সত্ত্বেও কোনও কাজ হয়নি। একবার অনুমোদন মিলে গেলেও প্রধান সেই কাজ আটকে দিয়েছেন। কেন তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, নাইয়া পড়ায় কোনও কাজ হবে না।'
যাঁর বিরুদ্ধে এত অভিযোগ সেই বিদায়ী পঞ্চায়েত প্রধান লিপিকা মণ্ডলের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি আমাদের দেখেই দ্রুত হাঁটা লাগিয়ে প্রতিবেশীর বাড়িতে ঢুকে পড়েন। যাওয়ার সময় বললেন,'আমি কোনও কথা বলব না।'