একে তো প্রচন্ড গরম। তার সঙ্গেই চড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ। ভোটের উত্তাপে তপ্ত বাংলা। হিংসাও চলছে পুরোদমে। লাশও পড়ছে একের পর এক । একেবারে যেন ২০১৮এর ছবি ফিরছে বাংলায়। ভয়াবহ পরিস্থিতি। রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে দ্বন্দ্ব একেবারে চরমে।
তার মধ্য়েই বর্ধমানের একটি চায়ের দোকানে অদ্ভূত পোস্টার দিলেন মালিক। সেই পোস্টারে অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে জানানো হয়েছে, ‘অনুগ্রহপূর্বক এবং দয়া করিয়া আগত ব্যক্তিবর্গকে অনুরোধ করা হচ্ছে যেহেতু নির্বাচনী দিনক্ষণ চূড়ান্ত হইয়া গিয়েছে সেই হেতু এই দোকানে বসিয়া কোনওরূপ রাজনৈতিক আলোচনা করিবেন না।’ রীতিমতো নোটিশ দিলেন দোকানের মালিক বৃদ্ধ দম্পতি।
বর্ধমান ২ ব্লকের পুরাতন বাস স্ট্য়ান্ড এলাকায় এই চায়ের দোকান। ভোট এলেই যেন চায়ের কাপে তুফান তোলেন সাধারণ মানুষ আর সঙ্গে রাজনৈতিক আলোচনা। তবে নানা মতের মানুষ আসেন চায়ের দোকানে। আর তাদের মধ্যে মতের অমিল হলেই ঝগড়া শুরু হয়ে যায়। সেকারণেই আগাম সাবধান করলেন দোকানের মালিকপক্ষ।
সত্তর বছর পেরিয়ে গিয়েছে দুর্জয় মণ্ডলের। আর ষাট বছর পেরিয়ে গিয়েছে ভারতী মণ্ডলের। দুজনেই প্রায় ৪০ বছর ধরে এই চায়ের দোকান চালাচ্ছেন। যা উপায় হয় তা দিয়েই কোনওরকমে সংসার চলে। তাঁরা চান না রাজনৈতিক আলোচনায় দোকানের শান্তি নষ্ট হোক। আসলে চারপাশটা বদলে গিয়েছে দ্রুত। কথায় কথায় বোমা বন্দুক। সেকারণে আর রাজনৈতিক আলোচনার মাধ্য়মে দোকানের শান্তি নষ্ট হোক এটা তারা চাইছেন না। তার জেরেই এবার দোকানে পোস্টার সেঁটেছেন তাঁরা। রাজনৈতিক আলোচনা করবেন না।
ভারতী মণ্ডল বলেন, আমরা বৃদ্ধ, বৃদ্ধা। আমার ছেলে প্রতিবন্ধী। সংসার কষ্টেই চলে। রাজনৈতিক আলোচনা করতে গিয়ে টেবিল চাপড়া চাপড়ি শুরু হয়ে যায়। সেকারণেই পোস্টার লিখতে বাধ্য় হয়েছি। এমন টেবিল চাপড়ে আলোচনা করে, যে ভয় লেগে যায়। আমরা স্বামী স্ত্রী দোকান চালাই। আমরা একটু শান্তি চাই। এখানে অশান্তি হোক এটা আমরা চাই না। জানিয়েছেন দোকানের অন্যতম মালিক।
এক ক্রেতা বলেন, চায়ের দোকানের মালিক লিখেছেন চায়ের দোকানে বিভিন্ন ধরনের মানুষ আসেন। রাজনীতির আলোচনা করতে গিয়ে অনেক দূর পর্যন্ত চলে যায়। এই আলোচনা অনেক দূর পর্যন্ত চলে যেতে পারে। সেকারণে এই উদ্য়োগ নিয়েছেন চায়ের দোকানের মালিক। এতে ভালোই হয়েছে। শান্তি বজায় থাকবে।