রাস্তায় থিকথিকে ভিড়। এক কিলোমিটার দূর থেকে শুধু দেখা যাচ্ছে কালো মাথা। চারিদিকে শুধু ঘাসফুলের পতাকা। হেঁটে আসছেন দেশের একমাত্র বিরোধী নেত্রী। আর ৮ থেকে ৮০ রাস্তায় নেমে তাঁকে জানাচ্ছেন, ‘তুমি আমাদেরই লোক’। তখন আজ, মঙ্গলবার ত্রিপুরায় পায়ে হেঁটে রোড–শো করছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেলা ১২টায় আগরতলার রবীন্দ্র ভবন থেকে শুরু হয় রোড–শো। ত্রিপুরা রাজবাড়ি, দুর্গাবাড়ি, ট্যাকশন গেট, কামান চৌমোহনি হয়ে বটতলা বাজার ঘুরে ফের রবীন্দ্র ভবনেই ফিরে আসেন তাঁরা। সেখানে নির্বাচনী সভা করার কথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। গোটা রাস্তা হাঁটলেন মমতা–অভিষেক। আর কথা বললেন মানুষের সঙ্গে।
দু’দিনের সফরে ত্রিপুরায় গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল তাঁকে দেখা গিয়েছিল খোস মেজাজে। তাই পান বানিয়ে খাইয়েছিলেন সকলকে। পুজো দেন ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে। তারপর আজ পদযাত্রা। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি ত্রিপুরা বিধানসভার ৬০ আসনে ভোটগ্রহণ হবে। তার আগে ছোট এই পার্বত্য রাজ্যে মমতার প্রচার বেশ সাড়া ফেলে দিয়েছে। সাধারণ মানুষ অনেক বেশি এই পদযাত্রায় যোগ দেন। যা ভাবিয়ে তুলেছে গেরুয়া শিবিরকে। কলকাতা থেকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আজ ত্রিপুরা রওনা হন। তাঁর দাবি, ‘নোটার থেকেও কম ভোট পাবে তৃণমূল। তাই এই দলের নাম মুখে আনবে না বিজেপি।’ সেখানে আজকের রোড–শো সংগঠনের মাত্রা বুঝিয়ে দিল বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিন রাজ্যের মানুষের সঙ্গে একাত্মতা বোঝাতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার হাতজোড় করে জনতা জনার্দনকে প্রণাম জানান। পাল্টা সাধারণ মানুষের মুখ থেকে শোনা যায়, ‘দিদি কেমন আছেন?’ মমতাও হাসি মুখে জানান ভাল আছি। পুরানো চেনা জায়গাতেই মিছিলে পা মেলালেন মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গী অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। তবে আগরতলায় মমতা আগেই বলেন, ‘যখন এখানে বিজেপি অত্যাচার করছে তখন কেউ ছিল না। আমি এসেছিলাম। এটা আমার ঘরের মতো।’ সোমবার দেখা গিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাস্তার পাশে এক দোকানে সটান ঢুকে পড়েন। প্রথমে যান সিঙারা–কচুরির দোকানে। সিঙারা বানানোর তদারকি করে নিজেই ময়দা বেলে তা সঠিক আকারে কেটে আলুর পুর ভরার বিষয়টিও বুঝিয়ে বলেন।
আজ যেন সেখান থেকেই শুরু করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনে ৬০টি আসনের মধ্যে ২৮টিতে প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। আজ সেই দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের সামনে থেকে একটি ‘রোড শো’ করেন মমতা–অভিষেক। আর পদযাত্রা করার সময়ই জনগণের নেত্রী বলেন, ‘যখন তোমার কেউ ছিল না, তখন ছিলাম আমি। ত্রিপুরার মানুষকে এই কথাটাই বলতে এসেছি।’