এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় যুগ্ম সম্পাদক তিনি। দীপ্সিতা ধর। তিনি এবার শ্রীরামপুর আসন থেকে বামেদের প্রার্থী। আর তাঁর বিপরীতে দাঁড়িয়েছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্য়ায়। দুঁদে আইনজীবী। পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ। তৃণমূলের সাংসদ। তবে শ্রীরামপুরের এই লড়াই কিন্তু পুরোদস্তুর জমে উঠেছে।
কল্যাণকে মিস্টার ইন্ডিয়া বলে কটাক্ষ করেছিলেন দীপ্সিতা। আসলে তিনি যে এলাকায় থাকেন না, সেটা বোঝানোর জন্যই তিনি এই শব্দবন্ধ ব্যবহার করেছিলেন। মিস্টার ইন্ডিয়া সিনেমার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেছিলেন, ওই সিনেমায় নায়ক অনিল কাপুর একটি ঘড়ি পরলে অদৃশ্য় হয়ে যেতেন। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্য়ায় শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রে তেমনই অদৃশ্য।
তবে দীপ্সিতার এই কটাক্ষ খেয়াল করেছেন কল্যাণ। আর তারপরই প্রচারে বেরিয়ে সেই দীপ্সিতাকে নিশানা করলেন তিনি। কল্যাণ বলেন, মিস ইউনিভার্স দেশ বিদেশ ঘুরে শেষ পর্যন্ত শ্রীরামপুরে এসে মিস্টার ইন্ডিয়াকে দেখতে পেয়েছেন। সেই সঙ্গেই রবীন্দ্র কবিতাও আবৃত্তি করে দীপ্সিতাকে খোঁচা দেন তিনি। তিনি বলেন, দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা, দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু…কল্য়াণ বলেন, আপনার কথার জবাব মানুষ ২০ মে দেবে। গণনার দিন শেষ পর্যন্ত থাকবেন। আমি যখন শংসাপত্র নেব তখন দেখে নেবেন কে জিতেছে। সেই সঙ্গেই তার সংযোজন, আগে ভিয়েতনামে বৃষ্টি হলে এখানে সিপিএমের কমরেডরা কৌটো নিয়ে সাহায্য তুলতে পথে নামতেন। এখন জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্য়ালয়ে এসএফআই জেতার আনন্দে মনে করছেন শ্রীরামপুরও জিতবেন।
২০২১ সালেও বিধানসভা ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন দীপ্সিতা। কিন্তু সেবার তিনি জিততে পারেননি। এবার কী হয় সেটাই দেখার। তবে ছাত্র রাজনীতি অনেকদিন ধরেই করছেন দীপ্সিতা। বাম রাজনীতির একেবারে উজ্জ্বলতম মুখ। রাজ্য়ের নানা আন্দোলনেও দেখা যায় তাঁকে। কিন্তু ভোটের রাজনীতিতে অঙ্কের হিসাবে তিনি কতটা এগিয়ে থাকতে পারবেন, কতটা তিনি কৌশল প্রয়োগ করতে পারবেন, সন্ত্রাস মোকাবিলা করতে পারবেন তার উপরেও অনেকটা নির্ভর করছে। সেক্ষেত্রে এবার শ্রীরামপুরের লড়াইয়ের দিকে তাকিয়ে রয়েছে গোটা বাংলা। বামেদের একেবারে স্বচ্ছ তরুণ তুর্কি মুখকে বেছে নেন সাধারণ মানুষ নাকি সেই কল্যাণের মতো অভিজ্ঞ সাংসদের প্রতিই আস্থা রাখেন মানুষ সেটাও দেখার।
তবে দীপ্সিতা পালটা জানিয়েছেন, আমি পেপার্স পড়ার জন্য বিদেশে গিয়েছি। চুরির টাকায় যাইনি। আসলে তৃণমূলের লোকজন চায় না যে পড়াশোনা করে কেউ বড় হোক।
ভোটের লড়াই চলছে। সেই সঙ্গেই চলছে বাক যুদ্ধ।