বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই কমল নাথের দলবদল নিয়ে জোর জল্পনা চলছে মধ্যপ্রদেশ থেকে দিল্লিতে। এককালে ইন্দিরা গান্ধীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এই নেতা গত কয়েকদিন ধরেই দিল্লিতে আছেন। একাধিক রিপোর্টে দাবি করা হয়, তিনি নাকি বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। তবে এই সব জল্পনা-কল্পনার মাঝেই কমল নাথের ঘনিষ্ঠ সহযোগী সজ্জন সিং বর্মা দাবি করলেন, কমল নাথ কোনও ভাবেই বিজেপিতে যাবেন না। এমনতী সজ্জন এও দাবি করেন, আসন্ন লোকসভা ভোটে মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস প্রার্থী বাছাইয়ের ওপরে নজর রয়েছে কমল নাথের। (আরও পড়ুন: বাংলায় আরও এক দফায় বাড়বে ডিএ, সরকারি কর্মীদের পকেটে ঢুকবে কত বেশি বেতন?)
আরও পড়ুন: 'আপ, কংগ্রেস উভয় দলই একলা চলার বিষয়ে একমত', জোট ভবিষ্যৎ নিয়ে মুখ খুললেন কেজরি
গতকালই কমল নাথের সঙ্গে দেখা করেন সজ্জন বর্মা। তারপরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, 'আমি যখন কমল নাথের সঙ্গে তাঁর বাড়িতে দেখা করলাম, তখন তিনি বেশ কিছু চার্ট নিয়ে বসে কাজ করছিলেন। মধ্যপ্রদেশের ২৯টি লোকসভা আসনের জাতপাতের অঙ্ক কষছিলেন।' সজ্জন দাবি করেন, কমল নাথ নাকি তাঁকে বলেছেন, 'আমার গান্ধী-নেহরু পরিবারের সঙ্গে খুব গভীর সম্পর্ক। এতে রাজনৈতিক অঙ্ক নেই, এই সম্পর্ক পারিবারিক।'
আরও পড়ুন: ঠিক যেন সিনেমার দৃশ্য! লাহোরে বিয়ে চলাকালীন চলল গুলি, খুন আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন
উল্লেখ্য, এর আগে ছেলে তথা সাংসদ নকুল নাথকে নিয়ে শুক্রবার নয়াদিল্লি পৌঁছে যান মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ। ওদিকে তাঁর ছেলে সোশ্যাল মিডিয়ায় বায়ো থেকে 'কংগ্রেস' বাদ দিয়েছিলেন সম্প্রতি। এদিকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তাঁর বিজেপিতে যোগদানের বিষয়টি নিশ্চিত না করলেও অস্বীকার করেননি কমল নাথ। সেই সময় সজ্জন সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের বেশ কিছু সিদ্ধান্তে কমল নাথ অত্যন্ত দুঃখ পেয়েছিলেন। সজ্জনের কথায়, 'একজন মানুষ সম্মান ও আত্মমর্যাদার জন্য রাজনীতি করে। আমি গত ৪০ বছর ধরে কমল নাথের সঙ্গে যুক্ত। তিনি আমার নেতা। তিনি যেখানে যাবেন, আমিও সেখানেই যাব।'
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকেই হাই কমান্ড হারের দোষ কমল নাথের ঘাড়ে চাপিয়েছিল। যা নিয়ে মনক্ষুণ্ণ হয়েছিলেন কমল নাথ। এদিকে রিপোর্টের দাবি, মধ্যপ্রদেশ থেকে নাকি রাজ্যসভার টিকিট চেয়েছিলেন কমল নাথ। তবে দল তাঁকে তা দেয়নি। এদিকে কমল নাথকে দলের রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় এবং তাঁকে বা তাঁর মনোনীত প্রার্থীকে রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা পদের জন্য বিবেচনা করাও হয়নি। এতে দলের মধ্যেই কোণঠাসা হয়ে পড়ছিলেন কমল নাথ।
এদিকে এই গোটা কমল নাথ পর্বের ওপর নজর রয়েছে পঞ্জাবের অকালি দলের। জানা যায়, কয়েকদিন আগেই নাকি পুরনো জোটসঙ্গী বিজেপির সঙ্গে ফের আসন বণ্টন নিয়ে আলোচনা শুরু করে অকালি দল। তাদের শিখ ভোটব্যাঙ্ক ফেরাতে মরিয়া অকালি দল। তবে কমল নাথ বিজেপিতে যোগ দিলে অকালির জন্য তা অস্বস্তির হবে। কারণ ১৯৮৪ সালের শিখ দাঙ্গায় বারবার নাম জড়িয়েছিল কমল নাথের। এই আবহে কমল নাথ বিজেপিতে যোগ দিলে নিজেদের ভোট সমীকরণ নতুন করে ভাবতে হতে পারে অকালি দলকে।