একুশের বিধানসভা নির্বাচনে শীতলকুচির ঘটনা ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠল। কারণ এখানে বিজেপি প্রার্থী করেছে প্রাক্তন আইপিএস অফিসার দেবাশিস ধরকে। এই প্রাক্তন পুলিশ কর্তার বিরুদ্ধে শীতলকুচি প্রসঙ্গ তুলে সুর সপ্তমে চড়িয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাতেই নির্বাচনী প্রচার সরগরম হয়ে উঠেছে। যদিও এটা কমব্যাট করতে প্রাক্তন ওই পুলিশ কর্তা বগটুই প্রসঙ্গ তুলে পাল্টা মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করেছেন। প্রাক্তন ওই পুলিশ কর্তাকে বিজেপি এবার বীরভূম লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করা হয়েছে।
এই প্রাক্তন পুলিশ কর্তা দেবাশিস ধর বীরভূম কেন্দ্রে প্রার্থী হতেই শীতলকুচিতে গুলি চালনার ঘটনা তুলে তাঁকে তুলোধনা করছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর কোচবিহারে নির্বাচনী জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আপনাদের মনে আছে গত নির্বাচনে শীতলকুচিতে চারজন সংখ্যালঘু যুবককে গুলি করা মারা হয়েছিল। আর এক জন রাজবংশী ভাইকেও। আমি নির্বাচনের মধ্যেই ছুটে এসেছিলাম। শীতলকুচির ঘটনায় যিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন, তিনি এখন বীরভূমে পালিয়ে গিয়ে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন। যাঁর বিরুদ্ধে ডিপি এবং ভিজিল্যান্স কমিশনে মামলা আছে।’
আরও পড়ুন: পাথুরিয়াঘাটায় ১০৮টি বিপজ্জনক বাড়ি চিহ্নিত হয়েছে, পদক্ষেপ করছে কলকাতা পুরসভা
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য আসলে বিজেপির মুখোশ খুলে দেওয়ার কৌশল বলে মনে করছেন অনেকেই। ২০২১ সালের ১০ এপ্রিল বিধানসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণের সময় কোচবিহারের শীতলকুচিতে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের বিরুদ্ধে। আলোড়ন পড়ে যায় রাজ্য–রাজনীতি। তখন ভোটের লাইনে থাকা চারজন যুবকের মৃত্যু হয়েছিল। আর ওই জেলার তখন পুলিশ সুপারের দায়িত্বে ছিলেন দেবাশিস ধর। আর মাথাভাঙার জনসভা থেকে বিজেপির এই প্রার্থীকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘হাতের রক্ত না মুছেই ভোটে নেমে পড়েছে।’ এটা হজম করতে পারেননি দেবাশিস ধর। পাল্টা শনিবার নলহাটি ২ ব্লকের শীতলগ্রামে প্রচারে গিয়ে দেবাশিস বলেন, ‘উনি শীতলকুচি নিয়ে বলছেন, আর বগটুই গ্রামে ১০ জনকে পুড়িয়ে মারা হল। সেটা নিয়ে তো কোনও প্রতিক্রিয়া নেই।’
এছাড়া মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই বলে সোচ্চার হয়েছেন বিজেপি প্রার্থী দেবাশিস ধর। তাই বগটুইকে হাতিয়ার করলেন দেবাশিস ধর। এমনকী এনআইএ অফিসাররা ভূপতিনগরে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা নিয়েও সোচ্চার হন তিনি। এই প্রসঙ্গ তুলেও তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করেন তিনি। দেবাশিস ধরের বক্তব্য, ‘কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা থেকে কেন্দ্রীয় সুরক্ষা বাহিনীকে আক্রান্ত হতে হচ্ছে। যাঁরা সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় কাজ করে চলেছেন, সন্ত্রাসবাদকে দমন করে চলেছেন তাঁদের আক্রান্ত হতে হয়েছে। এই মুখ্যমন্ত্রী দেশের আগে নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থের কথা ভাবেন।’