লোকসভা নির্বাচন এখন দুয়ারে কড়া নাড়ছে। আগামী ১৯ এপ্রিল লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ। সুতরাং বাংলায় এখন দেদার প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে। নয়াদিল্লি থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাংলায় এসে সভা করেছেন এবং পরেও করবেন। গোটা রাজ্যে সভা–সমাবেশ করে বেড়াচ্ছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচন কমিশন থেকে রাজ্যপালের দরবারে যাচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা। আর রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে রামমন্দিরে গেলেন। সপরিবারে মন্দির দর্শন করলেন তিনি। পুজোও দিলেন। এমনকী সরযূ নদীতে দীপদানও করলেন।
রামমন্দির এবং রামলালার প্রাণপ্রতিষ্ঠা বেশ কয়েক মাস আগে হয়েছে। তখন রাজ্যপাল আসেননি। ঠিক লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এলেন সিভি আনন্দ বোস। তাহলে কি রাজনীতিতে ধর্মের প্রবেশ ঘটানো হচ্ছে? এই প্রশ্ন উঠছে। বহু বিজেপি নেতারাই এখানে এসে ঘুরে গিয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও নেতা না এলেও তাঁরা রামের বিরোধী নন বলেই নানা সভা–সমাবেশে বলেছেন। কংগ্রেস–সহ বাকি অবিজেপি দলগুলির মত একই। সেখানে এতদিন পর রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস রামমন্দিরে উপস্থিত হয়ে পুজো দেওয়া বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
লোকসভা নির্বাচনের সময় রাজ্যপাল রাস্তায় থাকবেন বলে আগেই জানিয়েছেন। যাতে বাংলায় শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়। যদিও এটা দেখার জন্য নির্বাচন কমিশন রয়েছে। এই নির্বাচনী আবহে হঠাৎ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে দেখা গেল রামমন্দিরে। কেন তিনি রামমন্দিরে পুজো দিতে এলেন? এমন প্রশ্ন যখন উঠছে তখন রাজ্যপাল বলেন, ‘আমি নিয়মিত রামনাম করি। রামনাম একজন ব্যক্তির শুধু প্রার্থনা নয়। আসলে এই রামনাম সংস্কার এবং সংস্কৃতির গর্ব। তাই ভগবানের আশীর্বাদ প্রার্থনা করছি। সেই জন্য রামলালাকে বাংলার মাটি, বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল সমর্পণ করেছি।’ এই কথা রাজ্যের সংগীতে রয়েছে। যা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টি।
আরও পড়ুন: তৃতীয় দফার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করল আইএসএফ, ভাঁজ পড়ল বাম–কংগ্রেসের কপালে
রাজ্যপালের এই মন্তব্যই রাজনীতির বার্তা বহন করছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। ২০২৪ সালের ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় উদ্বোধন হয়েছে নবনির্মিত রামমন্দিরের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা হয়েছে রামলালার। গোটা দেশের পবিত্র স্থানগুলি থেকে মাটি, জল নিয়ে অযোধ্যায় পৌঁছে দিয়েছেন বিজেপি সাংসদরা। বাংলার বিজেপি সাংসদরাও একই কাজ করেছেন। আর এবার লোকসভা নিরবাচনের মুখে রাজ্যপালের রামমন্দিরে এসে রামলালা দর্শন যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।